শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আলালসহ ৬৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

pic-21_143664
লালমাটিয়ায় নিজ বাসায় বৈঠক করার সময় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ৬৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, হরতালের আগে নাশকতার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাঁদের আটক করা হয়েছে। পুলিশ ৬৩ নেতা-কর্মী আটকের কথা বললেও বিএনপি দাবি করেছে আটক নেতা-কর্মীর সংখ্যা ৮০। এ ঘটনার প্রতিবাদে কাল সোমবার সারা দেশের বিভাগ, জেলা ও মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে যুবদল।
যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ কালের কণ্ঠকে জানান, সামনে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য কেন্দ্র ও মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা সভাপতি আলালের বাসায় যান। সকাল ১০টার দিকে বাসার নিচের পার্কিং এলাকায় আলাল আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও ডিবি তাঁদের আটক করে। আলাল ছাড়াও সেখানে ৮০ জনের মতো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
যুবদলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশতিয়াক আহমেদ বিবেক কালের কণ্ঠকে জানান, বাসার নিচের চেম্বারে বসে আলাল নেতা-কর্মীদের  দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশের ছয়-সাতটি গাড়ি পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। তিনি আরো জানান, আলালের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা থাকলেও তিনি সব মামলায় জামিনে আছেন। আটক অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা নেই। গ্রেপ্তারকৃতরা বেশির ভাগই স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মী।
তবে মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শেখ রাজিবুল হাসান বলেন, হরতালকে সামনে রেখে নাশকতার পরিকল্পনা হচ্ছিল এমন গোপন খবরের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়। মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে তাঁর লালমাটিয়া নিউ কলোনি মাঠের পশ্চিম পাশের বাসার নিচের বৈঠকখানা থেকে আটক করা হয়। সেখানে তিনিসহ অনেকে গোপন বৈঠকে মিলিত হন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, গোপন বৈঠকে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে ৬৩ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করার সময় আলালসহ ৬৩ জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গতকাল গ্রেপ্তারকৃতদের মোহাম্মদপুর থানায় রাখা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করে আটককৃতদের স্বজন ও সহকর্মীরা। সেখানে লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। বিএনপির দাবি, সেখান থেকেও কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে আগামীকাল সোমবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে যুবদল। দপ্তর সম্পাদক কাজি রফিক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, সারা দেশের বিভাগ, জেলা ও মহানগরীতে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
আলালের মুক্তি চাইলেন রিজভী : গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আলালের মুক্তির দাবি করেছেন দলের দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।
রিজভী আরো বলেন, বিদেশে চিকিৎসারত সাদেক হোসেন খোকার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সরকার অজানা জনআতঙ্ক থেকেই এগুলো করছে। অবৈধ সরকারকে অবিলম্বে সরে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদল সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।