শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পী নিয়ে কাজ করলে হবে না, নতুনদের সুযোগ দিতে হবে

বিনোদন ডেক্সঃ| ধ্রুব গুহ। এ সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। ইউটিউবে তার কণ্ঠে দুটি গান পেরিয়েছে ‘কোটির ঘর’। গায়ক হিসেবে তিনি হয়েছেন সফল। পাশাপাশি গড়েছেন অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ধ্রুব মিউজিক স্টেশন’। নিজের প্রতিষ্ঠান থেকেও উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু জনপ্রিয় গান। সংগীতের এই মানুষটির সঙ্গে কথা হয় নানা বিষয় নিয়ে। ‘যে পাখি ঘর বোঝে না’ ও ‘শুধু তোমার জন্য’। আপনার গাওয়া দুটি গানই কোটির ঘর পার করেছে। কোটি পার হওয়ার অনুভূতি কেমন? অনুভূতি, ভালো লাগা চরম। তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দুটি গানই মানুষের মুখে মুখে। ইউটিউবে কোটির ঘর যেমন পার হয়েছে, তেমনি সাধারণ মানুষের কাছেও গানগুলো পৌঁছে গেছে। বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে গেছে প্লাবন কোরেশীর কথা, তরিকের সংগীত পরিচালনায় ‘যে পাখি ঘর বোঝে না’ ও প্রিন্স রুবেলের কথা, সুর ও তরিকের সংগীত পরিচালনায় ‘শুধু তোমার জন্য’ গান দুটি। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা

ইউটিউবের ভিউ নিয়ে বিতর্কও আছে। বুস্ট করেও নাকি ভিউ বাড়ানো যায়? এখন ডিজিটাল যুগ। গান শোনার প্রধান মাধ্যম ইউটিউব। এটাকে তো আর অস্বীকার করতে পারবেন না। মানুষ সারাদিন ফেসবুকে চোখ রাখে। বুস্ট করলে গানটি চোখের সামনে চলে যায়। শ্রোতার যদি ভালো লাগে তখনই তো শুনবে। ভালো লাগলেই গানটি ছড়িয়ে যাবে। গান যদি ভালো না হয়, বুস্ট করে কোনো গানকে কোটির ঘরে নিয়ে যাওয়া যায় না। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি। তার পরও ভিউ নিয়ে কিন্তু অনেকেই নানা মন্তব্য করে আসছে… যারা ভিউ নিয়ে সামনে এক কথা বলে, তারাই দিনশেষে দেখে তার নিজের গানের কত ভিউ হলো। প্রত্যেক আর্টিস্ট ভিউ দেখবেই। কারণ এটাই এখন মাধ্যম। আর কোনো মাধ্যম নেই। কোটি পার হওয়া গানগুলো বাণিজ্যিক দিক থেকে কতটা সফল? গান যে প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ হচ্ছে সে মাধ্যম যদি লাভবান হয় তাহলে গীতিকার, সুরকার শিল্পীÑ সবাই লাভবান হবে। এখনো সেই সময় আসেনি যে আমরা সফল। তবে আমরা আশাবাদী। এর জন্য সময় দিতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে। পাশ্চত্যের দিকে না গিয়ে বাংলা সংস্কৃতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা বাইরের গান শুনব ঠিকই। তাদের কপি করব না। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। প্রথমে গায়ক। গায়ক থেকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দিলেন। বাংলা গানকে এগিয়ে নিতে ধ্রুব মিউজিক স্টেশনেরও দায়বদ্ধতা আছে নিশ্চয়ই? আমাদের দেশে ভালো শিল্পীর সংখ্যা প্রচুর। আমি সবাইকে বলতে চাই, নতুনদের সুযোগ দিতে হবে। হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পী নিয়ে কাজ করলে হবে না। ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের উদ্দেশ্য হলো, বাংলা গানকে প্রমোট করা। সবার সঙ্গে শামিল হওয়া। ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করছি। সবাই যেন বোঝে, ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের দরজায় গেলে ভালো গান শোনা যায়। যারা জনপ্রিয় শিল্পী তাদের নিয়েও কাজ করছি। আবার নতুনদেরও সুযোগ দিচ্ছি। গায়কের মুখ দেখে নয়, ভালো গানকে আমরা মূল্যায়ন করব। আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ হওয়া আলোচিত গানের কথাগুলো যদি বলতেন… গান প্রকাশ করেছি ৫০- ৬০টি। এর মধ্যে শান এর ‘কন্যা’রে, আসিফ আকবরের ‘আগুন’, হাবিবের ‘মিথ্যে নয়’, ফুয়াদ ফিচারিং ইমরানের ‘ধোঁয়া’, এফ এ সুমনের ‘আসমানি’, তাহসানের ‘চলো না হারাই’, আসিফ আকবর ও কর্নিয়ার ‘কি করে তোকে বোঝাই’ গানগুলো শ্রোতারা বেশ ভালোভাবে নিয়েছে। এখানে কিন্তু সব জনপ্রিয় শিল্পীর নামই বললেন… ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের বয়স মাত্র ৭ মাস। আমাকে প্রথমে প্লাটফর্ম তৈরি করতেই হবে। পরিচিত মুখ আনতেই হবে। এর মধ্যে শান কিন্তু জনপ্রিয় মুখ ছিল না। এই এক গানই তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আগামীতে নতুন শিল্পীদেরও গান প্রকাশ হতে যাচ্ছে। আশা করছি তারাও বের হয়ে আসবে। একলা পাখি গানে মডেল হয়েছেন আসিফ আকবর। হঠাৎ আসিফ আকবরকে মডেল বানালেন কেন? আসিফ ভাই আমার প্রিয় মানুষ। কোনো পরিকল্পনা বা উদ্দেশ্য নিয়ে এই গানে মডেল করা হয়নি। আসিফ ভাই গানটা শুনে পছন্দ করেছেন। তিনি নিজের ইচ্ছায় মডেল হয়েছেন। এই গানের জন্য তিনি অনেক কষ্ট করেছেন। বান্দরবান গিয়ে আসিফ ভাইয়ের মতো মানুষ চার দিন শুটিং করেছেন। সম্মানি নয়, শুধু ভালোবাসার বিনিময়ে। যাদের অঢেল টাকা-পয়সা আছে তারা না হয় ব্যয়বহুল মিউজিক ভিডিও বানাচ্ছেন। অনেকেই মিউজিক ভিডিওর দৌড়ের সঙ্গে পেরে উঠছেন না। তাদের কী হবে? গান ভালো হলেও মিউজিক ভিডিও ছাড়া চিন্তাই করা যায় না। তবে, ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে এই মিউজিক ভিডিও থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সবার জোর দেওয়া উচিত লিরিক ভিডিওর প্রতি। একটা গানের মিউজিক ভিডিওতে যত ইনভেস্ট করা হয়, সেটা যদি লিরিক ভিডিওতে করা হয় তাহলে কয়েকটা গান তৈরি করা যাবে। আপনার কণ্ঠে শ্রোতারা নতুন কোন গান পেতে যাচ্ছে? বেশকিছু গান রেডি আছে। ৪-৫টার মতো। কাছাকাছি সময়ে গানগুলো প্রকাশ হবে।