বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

শিকড় সন্ধানী ইত্যাদি এবার পাবনায়- প্রচারিত হবে ২৯ সেপ্টেম্বর

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, পর্যটন ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে গিয়ে ইত্যাদি ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর পাকশীস্থ আমাদের দেশের শতাব্দী পেরিয়ে আসা একমাত্র ইস্পাত নির্মিত সর্ববৃহৎ রেল সেতু ঐতিহ্যবাহী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে। শুধু রেল চলাচলের জন্য ইস্পাত নির্মিত এত বিশাল সেতু সারা বিশ্বেই বিরল। পেছনে রেল সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, সামনে সড়ক সেতু লালন শাহ্ ব্রিজ আর মাঝখানে পাবনা জেলার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করে নির্মিত ইত্যাদির মঞ্চ। প্রাচীন আর বর্তমানের দুই পাশাপাশি নিদর্শন এবং পাশে বহমান নদীর ধারা সবকিছু মিলিয়ে চমৎকার দর্শনীয় স্থান এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ্ পয়েন্ট। শুধু অনুষ্ঠান নির্মাণেই নয়, স্থান নির্বাচনেও রয়েছে হানিফ সংকেতের ক্ষুরধার বুদ্ধিমত্তা ও তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ। তার প্রমাণ গঙ্গার তীরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে ইত্যাদি অনুষ্ঠান ধারণ। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে সে দিন ঈশ্বরদীতে ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠান শুরুর দিন সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিল। অনুষ্ঠান ধারণের সময়ও কখনো তুমুল বৃষ্টি, কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সাথে ছিল ঝড়ো হাওয়া। ফলে নদী তীরের এই মাঠটি হয়ে উঠে কর্দমাক্ত। এতসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় উপেক্ষা করে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের সামনে উন্মুক্ত স্থানে হাজার হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের প্রিয় ইত্যাদি সামনে বসে সরাসরি উপভোগ করার জন্য।

শিকড়সন্ধানী ইত্যাদিতে সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচারবিমুখ জনকল্যাণে নিয়োজিত মানুষদের খুঁজে এনে তাদের বিভিন্ন কর্মকা তুলে ধরা হয়। যাতে তাদের কাজ দেখে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন। এছাড়াও থাকে দেশী-বিদেশি অচেনা-অজানা স্থানকে নিয়ে তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। এবারের পর্বে রয়েছে পাবনার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ওপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন। যার জন্ম, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবকিছুই এই পাবনাতেই। পাবনার বেড়া উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের নিবেদিতপ্রাণ কৃষিকর্মী বাদশা মোল্লার ওপর রয়েছে একটি অনুকরণীয় প্রতিবেদন। প্রচার সর্বস্বত্বার এই যুগেও প্রচারবিমুখ কৃষি অন্তপ্রাণ বাদশা তার সীমিত সামর্থ্য নিয়ে বিনামূল্যে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নিজ হাতে বিতরণ করছেন বীজ আর সহায়তা করছেন বপনে। তার সেই বীজ থেকে বিভিন্ন শাকসবজিতে ভরে উঠছে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনা। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘পাবনা মানসিক হাসপাতাল’ এর ওপর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এছাড়াও রয়েছে বিদেশী প্রতিবেদন। এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে দু’টি। যেহেতু ইত্যাদি এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে ধারণ করা হয় এবং সেই অঞ্চলের শিল্পীদের দিয়েই গান করানো হয়, সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ইত্যাদিতে গান গেয়েছেন পাবনারই কৃতী সন্তান বাপ্পা মজুমদার ও তার দলছুট দল। পাবনারই আরেক কৃতী শিল্পী স্বনামধন্য অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী-মা, বোন, বন্ধু ও ভালোবাসার মানুষদের আবেগময় সম্পর্কের অনুভূতি নিয়ে একটি গান গেয়েছেন।

দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী যেই স্থানে ইত্যাদি ধারণ করা হয় সেই স্থানকে ঘিরে। দর্শকদের বরাবরের মতো এবারো ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-সোলায়মান খোকা, আব্দুল আজিজ, মহিউদ্দিন বাহার, আফজাল শরীফ, আব্দুল কাদের, জিয়াউল হাসান কিসলু, শবনম পারভীন, সুভাশিষ ভৌমিক, কামাল বায়েজিদ, জিল্লুর রহমান, কাজী আসাদ, শেলী আহসান, আমিন আজাদ, তারেক স্বপন, মুকুল সিরাজ, জামিল, শাহেদ আলী, নিপু, মনজুর আলম, জ্যোøে আরা, সাজ্জাদ সাজু, বাহার, ফাহিম, নিসা, সজল, মতিউর রহমান, আনোয়ার শাহী, ফরিদ, বিলু বড়–য়া, হাশিম মাসুদ, নজরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। পরিচালকের সহকারী হিসেবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন। গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে ২৯ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার রাত ৮ টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।