শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মানুষ ভিনগ্রহবাসীর বংশধর!

2016

সাধারণ মানুষের কাছে নাসা একটি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। কিছুটা বুঝদার মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠানটি সেনাবাহিনীর একটি বর্ধিত অংশ ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। এই দুটি ভাবনাই যে একেবারেই অমূলক তা নয়। শুরু থেকেই নাসা মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে কাজ করছে। বিগত ষাটের দশকে পৃথিবীব্যাপী ভিনগ্রহবাসীদের নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানের মানুষ ভিণগ্রহবাসীদের উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলেও তৎকালীন সময়ে নাসা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছিল সেই দাবি। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে শেষমেষ নাসাকে স্বীকার করতেই হলো যে, ভিনগ্রহবাসী বলে সত্যিই কিছু আছে এবং পৃথিবীর মানুষদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাত হয়েছিল।

সম্প্রতি নাসার প্রধান বিজ্ঞানী এলন স্টোফান তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আগামী এক দশকের মধ্যেই আমরা পৃথিবীর বাইরেও যে প্রাণের অস্তিত্ব আছে যার শক্তিশালী প্রমাণ পেয়ে যাবো। আমার মনে হয় আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যেই আমরা নিশ্চিতভাবেই হাতের কাছে প্রমাণ পেয়ে যাবো। মানুষ যে বিষয়ে সহস্রাব্দ ধরে বিস্ময় প্রকাশ করে আসছে আমরা তার শেষপ্রান্তে এসে পৌছেছি। আমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে, সৌরজগতের অন্য কোন অংশের মধ্যেও জীবন আছে। আমরা আরো বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে, পৃথিবী ছাড়াও সৌরজগতের অন্য প্রান্তে এর প্রভাব আছে।’

নাসার বিজ্ঞানীর এই বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীর বেশকিছু রাষ্ট্রের সরকারগুলো ইচ্ছে করেই ভিনগ্রহবাসীদের অস্তিত্বের কথা প্রকাশ করতে চায়নি। ব্যাপারটির সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে তারা অনেকগুলো গোপন প্রকল্প চালু করেছিল গত শতাব্দীতেই। আর এই রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া। এই রাষ্ট্রগুলোর সরকারের অভ্যন্তরে থাকা কিছু সংস্থা পর্যাপ্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ভিনগ্রহবাসীর বিষয়টি জনসাধারণের সামনে থেকে দূরে রাখেন। নাসার বিজ্ঞানী উইলিয়াম কুপার তাদেরই মধ্যে একজন। যদিও তিনিই শেষমেষ ভিনগ্রহবাসীর অস্তিত্ব স্বীকার করে বক্তব্য দান করেছিলেন। যদিও তার রহস্যময় মৃত্যু আজও বিজ্ঞানীদের ভয়ের কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

অনেক বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা দাবি করে আসছিলেন যে ভিনগ্রহবাসীর প্রাণীরা একটা সময় নিয়মিত পৃথিবীতে আসতো। ধারণা করা হয় প্রায় দশ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে তাদের প্রত্যক্ষ অস্তিত্ব ছিল এবং মানবশরীরে আজকের যে ডিএনএ ব্যবস্থা তা মূলত এই পৃথিবীর নয় বলেও অনেক বিজ্ঞানী দাবি করেন। আর ওই বিজ্ঞানীদের দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে প্রশ্ন দাড়িয়ে যায়, আমরা পৃথিবীর মানুষেরা কি তাহলে কোনো ভিনগ্রহবাসী বংশধর?

অনেকেই মনে করেন বর্তমান সময় যেমন বিভিন্ন গোপন নথি হ্যাকারদের মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, খুব নিকট ভবিষ্যতেই নুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো গোপন নথিগুলোও সাধারণ মানুষের হাতে চলে আসবে। এমনকি ভিনগ্রহবাসী সংক্রান্ত তথ্যচিত্রগুলোও মানুষ তাদের হাতের কাছে পেয়ে যেতে পারে। আর তাই যদি হয়, তাহলে সত্য গোপনের দায়ে এবং সাধারণ মানুষের মনস্তত্ব নিয়ে খেলার কারণে অনেক বিজ্ঞানীকেই আদালতের কাঠগড়ায় দাড়াতে হতে পারে।

এক্ষেত্রে আমরা মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের কথা উল্লেখ করতে পারি। এই মার্কিন প্রেসিডেন্টই সর্বপ্রথম গোপনীয়তার সঙ্গে ভিনগ্রহবাসীর বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন এভং এজন্য তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ নথিতে সাক্ষরও করেছিলেন। এই নথি বলে বিজ্ঞানীরা মহাকাশ এবং ভিনগ্রহবাসীদের নিয়ে বিনা বাধায় যেকোনো প্রকার পরীক্ষা চালাতে পারে। ট্রুম্যানের সময় অনেক মানুষ ভিনগ্রহবাসীদের কারণে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বলে জানা যায়। তৎকালীন সময়ে মার্কিন প্রশাসন তার জনগণকে এটা বোঝাতে সমর্থ্য হয়েছিল যে, ভিনগ্রহবাসীরা ভীতিকর এবং তাদের সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় গোপনীয়তার সঙ্গে দেখা হবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে।

আজ যখন নাসা ভিনগ্রহবাসীদের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে তখন স্বাভাবিক নিয়মেই নাসার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দায়ের করতে পারেন চাইলে উন্নত দেশগুলোর অনেক জনগণ। কারণ দীর্ঘদিন ধরে যারা ভিনগ্রহবাসীদের অস্তিত্বের কথা মানুষকে বলার চেষ্টা করছিলেন, তাদের মধ্যে অনেককেই শেষমেষ হয় হত্যা করা হয়েছিল নতুবা স্রেফ গুম করে ফেলা হয়েছিল।

বাংলামেইল২৪ডটকম/