শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আজ বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ

Boishak_520170414090110

খবরিকা ডেক্স: আজ পয়লা বৈশাখ। বাঙালির উৎসবের দিন। সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে এসেছে নতুন বছর, বঙ্গাব্দ ১৪২৪। নতুন বছর সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে নতুন প্রত্যাশা, নতুন শপথ। আজ দেশবাসী নানা অনুষ্ঠানে গানে গানে, আনন্দ আয়োজনে নতুন বছরটিকে বরণ করে নিচ্ছে। ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে উঠে সারাদেশ।

‘এসো হে, বৈশাখ এসো এসো/ তাপস নিঃশ্বাস বায়ে, মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক’/। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ গানের কথার মতই নতুন বছরের আগমনে ঘুচে যাবে অতীতের দীনতা, জড়তা, মূঢ়তা, ক্লেদ, গ্লানি ও পাপ। এই প্রত্যাশায় নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসবে।

রাজধানীতে প্রতিবছর ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পয়লা বৈশাখ উদযাপন। এবার তা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে, কারণ এই বটমূলের আয়োজন পঞ্চাশ বছরে পা রেখেছে। এটা জাতির জীবনে যা এক প্রেরণাসঞ্চারি ঘটনা। এছাড়া ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় নতুন অঙ্গীকার ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউট থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুধু ঢাকায় নয়,  এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে উদযাপন করতে সারাদেশে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়।

নতুন বছরকে বরণ করতে রাজধানীতে মানুষের ঢল নামে। সবার ঠিকানা হয়ে ওঠে রমনা বটমূলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি ও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর এলাকা। বর্ষবরণের এ উৎসব আমেজে মুখরিত হচ্ছে বাংলার চারদিক। তীব্র গরম উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হচ্ছে তার সার্বজনীন অসাম্প্রদায়িক উৎসবে।

পয়লা বৈশাখের দিনে উৎসবের শুরুটা সেই মোঘল সম্রাট আকবর আমলে। এ দিনে তিনি মিলিত হতেন প্রজাদের সঙ্গে। সবার শুভ কামনা করে চারদিকে বিতরণ করা হত মিষ্টি। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে বর্ষবরণ উৎসব চলে আসে জমিদার বাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মত একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান বাজনা, মেলা আর হালখাতার অনুষ্ঠান। আজ আর খাজনা আদায় নেই। তবে ‘হালখাতা’ রয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন একটি ‘লাল কভারের’ খাতায় হিসাব খুলে নতুন উদ্যমে শুরু করা হয় ব্যবসা।

এদিকে নববর্ষ উদযাপনের জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে আজ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিকাল পাঁচটার পরে কোনো উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না। বাঙালির এই প্রাণের উৎসবকে ঘিরে রমনা পার্কসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পুরোটাই ঢেকে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা চাদরে। শুধু রাজধানী ঢাকাই নয়, এ উপলক্ষে সারাদেশেই নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।