বলা হচ্ছে ঘটনাটি ৭০ বছরের মধ্যে চীনের সবচেয়ে প্রাণঘাতী নৌদুর্ঘটনায় পরিণত হতে পারে। সোমবার রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে মুহূর্তেই ৪৫৮ আরোহী নিয়ে উল্টে যায় পর্যটকবাহী ইস্টার্ন স্টার নামের চারতলা জাহাজটি। দেশটির ইয়াংজি নদীতে ডুবে যাওয়া ওই জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ আরোহীর লাশ। জীবিত উদ্ধার করা হয় সমান সংখ্যাক আরোহীকে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরও ৪০০ আরোহী। তাদের খোঁজে উল্টে থাকা জাহাজ ও আশপাশের নদীতে বুধবারও তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন ডুবুরি। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আর কাউকে জীবিত পাওয়ার আশা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে।খোদ চীনা প্রধানমন্ত্রী লে কেকিয়াং উদ্ধার অভিযান দেখতে ঘটনাস্থলে যান। নিখোঁজ যাত্রীদের আত্মীয়স্বজনদের ক্ষোভের মুখে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানের সর্বশেষ তথ্য নিয়মিতভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উদ্ধারকাজে যথাযথ কর্মী ও তহবিল যোগানোর আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, জাহাজটি পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংসু প্রদেশের নানজিং থেকে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চোংকিংয়ে যাচ্ছিল।কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত এক তালিকায় দেখা গেছে, জাহাজটির যাত্রীদের মধ্যে তিন বছর থেকে শুরু করে ৮০ বছরেরও বেশি বয়সি যাত্রী ছিলেন। উদ্ধারপ্রাপ্তদের মধ্যেও একজন বর্ষীয়ান নারী রয়েছেন। নদীতে উল্টে যাওয়া জাহাজটির একটি এয়ার পকেটে আটকা পড়েছিলেন তিনি। নিখোঁজ আরোহীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযানের সীমা ইয়াংজি নদীর ভাটিতে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়েছে।প্রবল বৃষ্টির কারণে নদীতে পানির স্রোত থাকায় জাহাজডুবির স্থান থেকে লাশ বহুদূর ভেসে যেতে পারে বলে ধারণা করছে উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ। সংলগ্ন এলাকায় ২৪ ঘণ্টা ছয় ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে চীনা টেলিভিশনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি। চীনা আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নদীটির যে জায়গায় জাহাজটি ছিল ঠিক ওই জায়গা দিয়েই টর্নেডোটি চলে যায়। চীনে টর্নেডো হলেও দেশটি টর্নেডোপ্রবণ নয়। দেশটিতে টর্নেডোর আঘাতে জাহাজ ডুবি একটি বিরল ঘটনা।উদ্ধার পাওয়া আরোহীদের মধ্যে জাহাজটির ক্যাপ্টেন ও প্রধান প্রকৌশলীও রয়েছেন। রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের আটক করেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, জাহাজটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল না ও জাহাজটিতে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য পর্যাপ্ত জীবনরক্ষাকারী পোশাক লাইফ জ্যাকেট ছিল। চীনে এতো বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা তেমন একটা ঘটে না। দেশটির বড় বড় নদীগুলোতে প্রধানত শিপ চলাচল করে পর্যটকবাহী ক্রুইজ।