সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

১০ জন খামারী আহত : ভোক্তাদের ঠকিয়ে যাচ্ছে মীরসরাইয়ের পোল্ট্রি সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আর্থসামাজিক সহ নানাবিদ বিবর্তনের এই যুগে পোল্ট্রি শিল্প মানুষের খাদ্য সংকট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু এক শ্রেণীর পোল্ট্রি ব্যবসায়ী পর্যায়ক্রমে ঠকিয়েই আসছে ভোক্তা সাধারনকে। ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত মূল্য ধরে মুরগী সরবরাহ করে ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রতি কেজীতে ২০ টাকা হারে নিচ্ছে। যা যাচ্ছে একটি পোল্ট্রি সিন্ডিকেটের পকেটে। আবার এ নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষে ৭জন আহত ও গতকাল গতকাল সোমবার (১৮মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত দুপক্ষের উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা যায়।

ভোক্তাদের কেজি প্রতি ২০ টাকা করে ঠকিয়ে ব্যবসায়ীক লাভের হিসেব নিকেসে গোলযোগ দেখা দেয়ায় সিপি নামের পোল্ট্রি কোম্পানীর বিরুদ্ধে প্রচারনায় নামলে এই পোল্ট্রি সিন্ডিকেটের সাথে বাধে বিবাধ। এরই জের ধরে গত রবিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় মীরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া এলাকায় দুই পক্ষ ও ক্রেতা ভোক্তা পরস্পর সংঘর্ষে আহত হয় পোলট্রি এসোসিয়েশনের উপদেষ্ঠা প্রফেসর আইয়ুব আলী, সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, যুগ্ন সম্পাদক আনিসুল হক, আনিস মোর্শেদ, আরিফ হোসেন, খামারী মোশাররফ হোসেন, শহীদ উদ্দিন, আলমগীর হোসেন ও মোহাম্মদ মিঠু সহ অন্তঃত ১০ জন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত কামরুল হাসান মিঠুকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এসময় ৩ টি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করে পরস্পর। এই হামলার জন্য পোল্ট্রি এসোসিয়েশান সিপি কে দায়ী করে। তবে সিপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই ঘটনার সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই, হামলাকারীদের তাঁরা চিনেন না বলে ও দাবী করেন।
আবার উক্ত হামলার পর থেকে এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত গতকাল সোমবার (১৮মে) রাত পর্যন্ত দুপক্ষের মধ্যে পাল্টা হামলার আশংকায় যথেষ্ঠ উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে মঘাদিয়া থেকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
এই বিষয়ে মীরসরাই থানার ওসি এমকে ইমতিয়াজ ভূঞা এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে, আর এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ না পেলে ও আমরা মৌখিক ভাবে উভয়পক্ষকে সমঝোতার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে দুই পক্ষের এই হাঙ্গামার মৌলিক বিষয় নিয়ে মীরসরাই পৌর বাজারের জনৈক পোল্ট্রি মুরগী বিক্রেতা জয়নাল আবেদিন বলেন অধিকাংশ পোল্ট্রি মুরগী হ্যাচারী খামারিদের কাছ ক্ষুদে বিক্রেতারা থেকে ১৪০-৪৫ টাকা কেজি করে ক্রয় করছে। আর বিক্রি করছে ১৬০ টাকা করে। কিন্তু সিপি কোম্পানী থেকে নগদ টাকা দিয়ে কিনে আনলে ১২০ টাকা করে কিনতে পারছে বিক্রেতারা এতে ক্রেতারা কমপক্ষে এতে ওরা ১৪০ টাকা বাজার মূল্য দিতে পারলে ও অন্যান্য বিক্রেতাদের জন্য ১৬০ টাকাই বিক্রি করছে। অথচ সিপির মুরগী নিয়ে আরো ২০ টাকা কমে ১৪০ টাকা কেজি প্রতি মূল্যে বিক্রি করতে পারতো। আর এই ধারার পরিবর্তন হতে পারে আতংকে এতেই পোল্ট্রি সিন্ডিকেট দিশেহারা। অপর মুরগী বিক্রেতা সাহাবুদ্দিন বলে এই সিন্ডিকেট এর সাথে খামারীদের বাকিতে খাবার ও বাচ্চা দেবার লেনদেন রয়েছে। তাই বেশী মূল্যে হলে ও ওদের কাছ থেকেই অনেককে কিনতে হয়। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এই সিন্ডিকেটের কারনে ভোক্তাগন কেন ২০ টাকা অতিরিক্ত মূল্য দিতে হবে। মীরসরাই বাজারের জনৈক ক্রেতা নাগরিক কমিটির সভাপতি শেখ শহিদুন্নবী বলেন অনেক পোল্ট্রি হ্যাচারী মালিক দু-একটি শেড থেকে এখন কোটিপতি। তবু ও সেই সিন্ডিকেট দিনের পর দিন ক্রেতাদের ঠকিয়ে যাচ্ছে , যা অনেক দরিদ্র মানুষের জন্য অবিচার ও । এভাবে মীরসরাই উপজেলার লক্ষ লক্ষ ক্রেতা সাধারন জিম্মি এই পোল্ট্রি ও ফিড ব্যবসায়ী সিন্ডেকেটের কাছে। তবু ও সচেতনমহল মনে করেন ক্রেতা ভোক্তা এবং বিক্রেতা সকলের সমন্বয়ে ক্রেতাদের পাশে যারা থাকবে তাদেরই সাধুবাদ জানানো উচিত সকলের, আর অপসারন উচিত ক্রেতাদের ঠকানো সিন্ডিকেট।
mirsori moltri chobi 003