শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

স্টেম সেল’ থেকে তৈরি ‘কৃত্রিম রক্ত’ বাঁচাবে জীবন

image_96122.0,,17676648_303,00

নিয়মিত রক্তদানকে অনেকেই জীবনের অংশ করে নিয়েছেন। তারপরও সারা বিশ্বে জটিল রোগে আক্রান্ত এবং অস্ত্রোপচারের টেবিলে শোয়া রোগীদের জীবন বাঁচাতে গবেষকরা তাকিয়ে আছেন ‘স্টেম সেল’ থেকে কৃত্রিম উপায়ে রক্ত তৈরির গবেষণার দিকে।
যুক্তরাজ্যের প্রায় চার শতাংশ মানুষের কাছ থেকে প্রতি বছর রক্ত সংগ্রহ করে স্কটিশ ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিস। নতুন নতুন দাতা খোঁজার তাগিদ থেকে এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সব সময়ই চেষ্টা করেন, যাতে প্রথমবার রক্ত দিতে আসা দাতাদের কোনো বিরূপ অভিজ্ঞতা না হয়। পাশাপাশি কৃত্রিম রক্ত তৈরির উপায় বের করতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রান্সফিউশন সার্ভিসের বিজ্ঞানীরার।
এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (মেডিকেল) মার্ক টার্নার বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক স্টেম সেল থেকে রক্ত উৎপাদন করা সম্ভব – তত্ত্বীয়ভাবে তা আগেই জানা ছিল। কিন্তু এসব কোষের সংখ্যা বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারণে এ পদ্ধতিতে বড় পরিসরে রক্ত তৈরি করা সম্ভব হয় না।
‘‘এখন বিজ্ঞানীরা যেটা করতে পারেন, তা হলো ভ্রুণ বা পূর্ণবয়স্ক কলাতন্ত্র থেকে ‘প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল’ সংগ্রহ করা, যা থেকে অনেক বেশি পরিমাণে স্টেম সেল সংগ্রহ করা যায়। এই গবেষণায় সফল হতে আমাদের আরো বহু পথ যেতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের গবেষকরা আপাতত পরীক্ষাগারে লোহিত রক্তকনিকা তৈরির চেষ্টা করছেন, যা হবে পরিমাণে বেশি এবং মানব দেহে প্রবেশ করালে কোনো ঝুঁকি তৈরি হবে না।
টার্নার বলেন, এ পদ্ধতি খুবই জটিল। এ সব কোষের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য পাঁচ থেকে ছয়বার কালচার করতে হয়। আর লোহিত কনিকা তৈরি হতে সময় লাগে প্রায় এক মাস।‘‘আমাদের এখন এই কৌশলকে পরীক্ষাগার থেকে পুরোপুরি একটি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে। এ কাজে মান নিয়ন্ত্রণ এবং খরচ কম রেখে অন্যান্য শর্ত পূরণ করা বেশ কঠিন। ১০ লাখ রক্ত কনিকা তৈরি করতে যদি ১০ লাখ পাউন্ড প্রয়োজন হয়, তাহলে সেই রক্ত কারো কাজে আসবে না।”উন্নত দেশগুলোর হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংকে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গরিব দেশগুলোর পরিস্থিতি ভিন্ন। বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ করা হয় তার অর্ধেক গ্রহণ করে বিশ্বের ১৫ শতাংশ মানুষ, যাঁরা আবার বিভিন্ন উন্নত দেশের বাসিন্দা।
টার্নার বলেন, ‘‘প্রতি বছর বিশ্বে দেড় লাখ নারী সন্তান জন্ম দেয়ার পর রক্তক্ষরণে মারা যান। রক্তের সরবরাহ বাড়ানো গেলে এই মায়েদের অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হবে।”
কথার খাতিরে গবেষণাগারে তৈরি রক্তকে ‘কৃত্রিম’ বলা হলেও আসলে তা মোটেও কৃত্রিম নয়, কেননা মানুষের কোষ থেকেই এ রক্ত তৈরি হচ্ছে। আর গবেষণার কাজে ভ্রুণের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ত্বকের কোষ থেকে যে প্রক্রিয়ায় রক্ত তৈরির কথা গবেষকরা ভাবছেন, তা নিয়েও কোনো আপত্তি এ পর্যন্ত ওঠেনি। ডয়েচে ভেলে