পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনা করে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। ছয়দিন অনুসন্ধান শেষে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে সরকারের প্রতি এই সুপারিশ প্রদান করে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এ্যামিলিয়া ওয়ালসনের নেতৃত্বে ২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর এই ৬ দিন ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবোঝাই ট্যাংকরডুবির ঘটনায় অনুসন্ধান চালান।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, তেলের ট্যাংকরডুবির ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে সীমিত আকারে। স্থানীয় জনগণ ও বনবিভাগের তৎপরতার কারণে এর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে তেমন পড়েনি। শ্যালা নদীর ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত তেল ছড়িয়ে আছে এই বিষয়টি প্রতিনিধি দলের চোখে পড়েছে। তবে বন্যপ্রাণীর ওপর এর প্রভাব খুব কমই লক্ষ্য করা গেছে।ভাটার কারণে সুন্দরবনের ভেতরে তেল প্রবেশ করেনি বলে ক্ষতি কম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা নির্ধারণের জন্য, স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে প্রতিনিধি দল মনে করে।বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনেক দক্ষ বলেও জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল মনে করে। তবে তাদের দাবি, তেল দূষণ ব্যতিক্রম ধরনের দুর্যোগ দাবি করে তারা বলছে, এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। টেকনিক্যাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে এই ধরনের দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের প্রধান এ্যামিলিয়া ওয়ালসন বলেন, ‘সুন্দরবনের পরিবেশ ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কম প্রভাব লক্ষ্য করা গেলেও দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে তার জন্য স্বল্পমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।’
এ সময় সুন্দরবনে তেলবোঝাই ট্যাংকরডুবির ঘটনাকে বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা বলেও উল্লেখ করেন এ্যামিলিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বন ও পরিবেশ মস্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে সুন্দরবনে ক্ষতি কম হয়েছে।’
সুন্দরবন দিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ করা হবে কিনা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, ‘সরকার বিকল্প নৌ-রুটের বিষয়ে চিন্তা করছে।’