শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সাহস থাকলে আমাকে তাড়ান : মমতা

13_95709

 

ক্ষমতা থাকলে নরেন্দ্র মোদি ‘আমাকে বাংলা থেকে তাড়ান’ বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার বারাসাত, বনগাঁ এবং বেড়াচাঁপায় তিনটি নির্বাচনী জনসভায় মমতার আক্রমণের মূল লক্ষ্যই ছিলেন মোদি। তুলনায় তিনি অনেক কম আক্রমণ করেছেন সিপিএম এবং কংগ্রেসকে।
শ্রীরামপুরের সভায় ২৭ এপ্রিল মোদি বাংলাদেশীদের তাড়ানোর যে কথা বলেছিলেন, অন্য সব ছেড়ে তাকেই এখন মমতা পরের দুই দফার ভোটের আগে মূল ইস্যু করে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন। মোদির উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে আগে আমাকে বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে রাজ্য থেকে তাড়ান। তারপর বাংলার মা-বোনেদের গায়ে হাত দেবেন। টাচ্ মি, ইফ ইউ ক্যান। একটা লোককে তাড়ানোর সাহস নেই, বাঙালি তাড়াতে এসেছেন।’ শ্রীরামপুরের সভায় মোদি বলেছিলেন, ‘১৯৪৭ সালের পর যারা বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসেছেন, তারা বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে তৈরি থাকুন। ১৬ মে’র পর সবাইকে ফেরত পাঠাব।’ ওই সভার পর মোদির ভাষণ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে অবশ্য রাজ্য বিজেপি মোদির ভাষণের ব্যাখ্যা দিয়ে বলে, তিনি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন, শরণার্থীদের নয়। এই ইস্যুতে সিপিএম-ও মোদির সমালোচনা শুরু করেছে। শ্রীরামপুরের সভার পরদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নবান্নের গেটে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সাংবাদিক বৈঠকে মোদিকে একেবারে তুলোধোনা করেন। তার অভিযোগ, মোদি বাংলায় এসে জাতিদাঙ্গা ছড়াচ্ছেন। মমতার মন্তব্য ছিল, ‘তাড়ানোর তুই কে? তুই কোন হরিদাস?’ পরে বিভিন্ন সভায় মমতা মোদিকে গ্রেফতারেরও দাবি তোলেন। কোনো কোনো সভায় তিনি এমনও বলেন, ‘ভদ্রতার খাতিরে আপনাকে সভা-সমিতি করতে দিচ্ছি। এটাকে আমাদের দুর্বলতা ভাববেন না। নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আপনার সভা নিষিদ্ধ করে দিতে পারি।’ কাকতালীয় ঘটনা হল, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও এদিন পাশের জেলা নদীয়ায় এক নির্বাচনী সভায় মোদির বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, ‘উনি বাংলার সংস্কৃতি, শিক্ষা, সভ্যতা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।১৯৪৭ সালের পর এ দেশে আসা মানুষদের তাড়াতে গেলে তো লালকৃষ্ণ আদভানিকেও তাড়াতে হয়।’ মোদিকে গ্রেফতারের দাবি করায় মমতার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, ‘একজন মুখ্যমন্ত্রী কী করে আর একজন মুখ্যমন্ত্রীর নামে এ কথা বলতে পারেন?’
এদিকে, শ্রীরামপুরের সভার পর মোদি দিল্লির সাংবাদিকদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘হরিদাস পাল কাকে বলে?’ সোমবারের সভাগুলোতে মমতা সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘ও নাকি জানতে চেয়েছে, হরিদাস পাল কাকে বলে। আমি বলছি, যারা দাঙ্গা বাঁধায়, তাদের হরিদাস পাল বলে।’
এদিকে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এবার জাতপাতের মোক্ষম অস্ত্র ছাড়লেন নরেন্দ্র মোদি। প্রিয়াংকা গান্ধীর মন্তব্যকে কাজে লাগিয়ে নিচুতলার ভোটারদের সমর্থন আদায়ে একধাপ এগোনোর চেষ্টা করলেন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। এর আগে প্রিয়াংকাকে ‘কন্যাসম’ বলে সোনিয়া-তনয়ার বিরাগভাজন হন মোদি।