রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবিবেচকের মতো মন্তব্যে সরকার নয়, লতিফ সিদ্দিকী নিজেই বেকায়দায় পড়েছেন। লতিফ সিদ্দিকীর মন্তব্য জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এটা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ মন্তব্যের দায় তাকেই বহন করতে হবে। খেসারতও দিতে হবে তাকে। এ জন্য যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
শুক্রবার বিকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা ও দলে রাখা হবে না। তবে সাংবিধানিক এবং আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মেনেই কাজটি সম্পন্ন করা হবে। রাষ্ট্রপতি হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে ফিরলে অব্যাহতি সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করবেন। এরপর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে যাবে। আর দল থেকে বহিষ্কারের জন্য আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অনুমোদন লাগবে। এজন্য কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরে গতকাল গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লতিফ সিদ্দিকীর প্রসঙ্গ ছাড়াও বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে কথ বলেন। এছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তার জীবনের ঝুঁকি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা, দু’দেশের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে কথা বলেন। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতির কারণে জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ও সাংবাদিকদের অবহিত করেন। ইতিহাস বিকৃতি, একে খন্দকার এবং তাজউদ্দীনকন্যা শারমিন আহমেদের বই, প্রবাসে অবস্থানকারী বিএনপি নেতা, বিদ্যুতের লোডশেডিং, গ্যাস উত্তোলন, সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী, বিচারপতিদের অপসারণ, কারণে-অকারণে সরকারের সমালোচনা সম্পর্কেও স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তৃতা ছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজে ধর্মে বিশ্বাস করি। আমার দলের লোক আমার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলবে বা সেই ধরনের কাজ করবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সে কারণেই আমি আদেশ দিয়েছি। এখন এটা কার্যকর হবে। আমি বিমানে উঠেই ঘটনাটি শুনেছি এবং লন্ডনে এসেই দেশে যোগাযোগ করেছি। তখনই লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে আমি এতটুকু দেরি করিনি । এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর সুযোগ নেই।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ। তিনি বলেন, আমরা যখন আগ্রহ দেখালাম তখন তাদের কোনো খবর ছিল না। এখন কার সঙ্গে আলোচনা করব? কোনো খুনির সঙ্গে আলোচনা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কিসের আলোচনা?
বিএনপি জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুমকির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের হুমকি শুনেই যাচ্ছি। কঠোর আন্দোলন দেখার মতো ক্ষমতা সরকারের আছে। এ ধরনের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। তিনি বলেন, এরা যদি আন্দোলনের নামে আবার মানুষ খুন শুরু করে তাহলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক কিছু বলা হয়েছিল, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে নাকি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু হয়নি। এরা আইভি রহমানকে হত্যা করেছে। তাই তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।
বান কি মুনের সঙ্গে বিরোধী দল নিয়ে সংলাপ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, আসলে এতটা রাজনৈতিক দৈন্যে বাংলাদেশের মানুষ কখনও পড়েনি। বিশ্ব দরবারে এখন আর কোনো রাজনৈতিক সমস্যার কথা কেউ বলছে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে এবং নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে আমাদের সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিশ্ব নেতারা। একই সঙ্গে তারা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেছেন। বিনিয়োগবান্ধব দেশ গড়তে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক মানুষের জীবন ঝুঁকিতে থাকে। সবার মতো আমারও ঝুঁকি থাকতে পারে। খুনিরা এই মাটিতে আমার মা-বাবা, ভাই, এমন কি ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকেও ছেড়ে দেয়নি। ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই আমি এসেছি। কোনো ঝুঁকির পরোয়া করি না। ঝুঁকি নিয়ে চিন্তাও করি না। এদেশের মানুষের জন্য আমার বাবা সব কিছু ত্যাগ করেছেন। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা বাবার স্বপ্ন ছিল। বাবার স্বপ্নের বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে। কে কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না। হয়তো কিছু উচ্চ শ্রেণীর মানুষ ভুল করতে পারে, সাধারণ মানুষ নয়। আমি সেই সাধারণ মানুষের ওপরই ভরসা করি, তাদের কথা ভেবেই চলি। আমি জীবনের পরোয়া করলে আপনারা গণতন্ত্র ফেরত পেতেন না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, যে যার আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে যাচ্ছে। আমাদের মন্ত্রী (একে খন্দকার) যেটা লিখেছেন, সেটা প্রকাশকরা কিভাবে প্রকাশ করেন। তাছাড়া, দুটি বইয়ের লেখা একজনের বলেই মনে হয়। আরেকজন মুচলেকা দিয়ে বিদেশে বসে ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা করছেন, দেশবাসী তাকে চেনে। অপকর্মের পর এখন বিকৃত কথা বলেই যাচ্ছে। সত্যিকারের ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।
মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাকে পদত্যাগ করতে বলব। না করলে তাকে বিদায় করে দেয়া হবে। এজন্য সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তাকে বিদায় দিতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন। আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ফাইল তৈরি রাখতে বলেছি, তারা ফাইল তৈরিও করেছে। দল থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এজন্য ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা করতে হবে। সেখানে অভিযোগগুলো তুলে ধরা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বন্দিবিনিময় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচন চলছে। এটি প্রক্রিয়াধীন। বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের ৬৪ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পায়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব কিন্তু অপচয় যেন না হয়। এ সময় রসিকতা করে তিনি বলেন, লোডশেডিং যেন মানুষ ভুলে না যায় সেজন্য এটা (লোডশেডিং) হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আগে যে কাজ শুরু করেছিলাম তা দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব এমনটি ভাবিনি, এটাই আমাদের সব চেয়ে বড় পাওয়া। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে সে সুযোগ পেলাম। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। নির্ধারিত সময়ের কিছু পর গণভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং দলের সংসদ সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হজ, পূজা আর ঈদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, সবাইকে হজের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সবাই যাতে সহি-সালামতে দেশে ফিরে আসেন সেই কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রীর এ সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে।
শুক্রবার বিকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা ও দলে রাখা হবে না। তবে সাংবিধানিক এবং আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মেনেই কাজটি সম্পন্ন করা হবে। রাষ্ট্রপতি হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে ফিরলে অব্যাহতি সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করবেন। এরপর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে যাবে। আর দল থেকে বহিষ্কারের জন্য আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অনুমোদন লাগবে। এজন্য কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরে গতকাল গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লতিফ সিদ্দিকীর প্রসঙ্গ ছাড়াও বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে কথ বলেন। এছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তার জীবনের ঝুঁকি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা, দু’দেশের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে কথা বলেন। একই সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতির কারণে জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ও সাংবাদিকদের অবহিত করেন। ইতিহাস বিকৃতি, একে খন্দকার এবং তাজউদ্দীনকন্যা শারমিন আহমেদের বই, প্রবাসে অবস্থানকারী বিএনপি নেতা, বিদ্যুতের লোডশেডিং, গ্যাস উত্তোলন, সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী, বিচারপতিদের অপসারণ, কারণে-অকারণে সরকারের সমালোচনা সম্পর্কেও স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তৃতা ছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজে ধর্মে বিশ্বাস করি। আমার দলের লোক আমার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলবে বা সেই ধরনের কাজ করবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সে কারণেই আমি আদেশ দিয়েছি। এখন এটা কার্যকর হবে। আমি বিমানে উঠেই ঘটনাটি শুনেছি এবং লন্ডনে এসেই দেশে যোগাযোগ করেছি। তখনই লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে আমি এতটুকু দেরি করিনি । এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর সুযোগ নেই।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ। তিনি বলেন, আমরা যখন আগ্রহ দেখালাম তখন তাদের কোনো খবর ছিল না। এখন কার সঙ্গে আলোচনা করব? কোনো খুনির সঙ্গে আলোচনা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কিসের আলোচনা?
বিএনপি জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুমকির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের হুমকি শুনেই যাচ্ছি। কঠোর আন্দোলন দেখার মতো ক্ষমতা সরকারের আছে। এ ধরনের হুমকি দিয়ে লাভ নেই। তিনি বলেন, এরা যদি আন্দোলনের নামে আবার মানুষ খুন শুরু করে তাহলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক কিছু বলা হয়েছিল, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে নাকি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু হয়নি। এরা আইভি রহমানকে হত্যা করেছে। তাই তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।
বান কি মুনের সঙ্গে বিরোধী দল নিয়ে সংলাপ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, আসলে এতটা রাজনৈতিক দৈন্যে বাংলাদেশের মানুষ কখনও পড়েনি। বিশ্ব দরবারে এখন আর কোনো রাজনৈতিক সমস্যার কথা কেউ বলছে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে এবং নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে আমাদের সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিশ্ব নেতারা। একই সঙ্গে তারা আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেছেন। বিনিয়োগবান্ধব দেশ গড়তে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক মানুষের জীবন ঝুঁকিতে থাকে। সবার মতো আমারও ঝুঁকি থাকতে পারে। খুনিরা এই মাটিতে আমার মা-বাবা, ভাই, এমন কি ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকেও ছেড়ে দেয়নি। ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই আমি এসেছি। কোনো ঝুঁকির পরোয়া করি না। ঝুঁকি নিয়ে চিন্তাও করি না। এদেশের মানুষের জন্য আমার বাবা সব কিছু ত্যাগ করেছেন। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা বাবার স্বপ্ন ছিল। বাবার স্বপ্নের বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সেভাবে গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে। কে কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না। হয়তো কিছু উচ্চ শ্রেণীর মানুষ ভুল করতে পারে, সাধারণ মানুষ নয়। আমি সেই সাধারণ মানুষের ওপরই ভরসা করি, তাদের কথা ভেবেই চলি। আমি জীবনের পরোয়া করলে আপনারা গণতন্ত্র ফেরত পেতেন না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, যে যার আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে যাচ্ছে। আমাদের মন্ত্রী (একে খন্দকার) যেটা লিখেছেন, সেটা প্রকাশকরা কিভাবে প্রকাশ করেন। তাছাড়া, দুটি বইয়ের লেখা একজনের বলেই মনে হয়। আরেকজন মুচলেকা দিয়ে বিদেশে বসে ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা করছেন, দেশবাসী তাকে চেনে। অপকর্মের পর এখন বিকৃত কথা বলেই যাচ্ছে। সত্যিকারের ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।
মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাকে পদত্যাগ করতে বলব। না করলে তাকে বিদায় করে দেয়া হবে। এজন্য সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তাকে বিদায় দিতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল পাঠাতে হবে। রাষ্ট্রপতি হজে গেছেন। আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ফাইল তৈরি রাখতে বলেছি, তারা ফাইল তৈরিও করেছে। দল থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এজন্য ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা করতে হবে। সেখানে অভিযোগগুলো তুলে ধরা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বন্দিবিনিময় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচন চলছে। এটি প্রক্রিয়াধীন। বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে সাংবাদিকের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের ৬৪ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পায়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব কিন্তু অপচয় যেন না হয়। এ সময় রসিকতা করে তিনি বলেন, লোডশেডিং যেন মানুষ ভুলে না যায় সেজন্য এটা (লোডশেডিং) হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আগে যে কাজ শুরু করেছিলাম তা দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব এমনটি ভাবিনি, এটাই আমাদের সব চেয়ে বড় পাওয়া। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে সে সুযোগ পেলাম। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। নির্ধারিত সময়ের কিছু পর গণভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং দলের সংসদ সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হজ, পূজা আর ঈদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, সবাইকে হজের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সবাই যাতে সহি-সালামতে দেশে ফিরে আসেন সেই কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রীর এ সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে।