বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

সবাইকে ছাড়িয়ে মুস্তাফিজ

vvvv
মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়ে দিলেন, তিনি ধূমকেতু নন, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এসেছেন ধ্রুবতারা হতে। ৫ উইকেট নিয়ে স্মরণীয় করেছিলেন অভিষেক। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ছাড়িয়ে গেলেন অভিষেককেও! গতকাল ভারতের বিপক্ষে তরুণ বাঁহাতি পেসার নিয়েছেন ৬ উইকেট! ওয়ানডে ইতিহাসে ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচে ৫ ও ৬ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড আর কারো নেই।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল সাকিব আল হাসানের। সাকিবের আবির্ভাব বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অন্য এক যুগে নিয়ে গিয়েছিল। সাকিব এখন বিশ্বসেরা একজন অলরাউন্ডার। সাকিবের মতোই ওয়ানডেতে ১৯ বছর বয়সে অভিষেক তরুণ মুস্তাফিজের। সাকিব প্রতিপক্ষ হিসেবে জিম্বাবুয়েকে পেলেও মুস্তাফিজ পেয়েছেন ভারতকে। গড়েছেন ইতিহাস। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাকিব আল হাসান বললেন, ‘রত্নের খোঁজ পেয়েছে বাংলাদেশ, মুস্তাফিজ বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’

এর আগে ক্যারিয়ারের প্রথম দু’ ওয়ানডে খেলায় পাঁচ উইকেট করে ১০ উইকেট শিকারের রেকর্ড রয়েছে জিম্বাবুয়ের ব্রায়ান ভিটরির। ২০১১ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ওই রেকর্ড করেন ভিটরি। কিন্তু গতকাল ভিটরিকে ছাড়িয়ে গেলেন বিস্ময় বালক মুস্তাফিজুর রহমান। বলা হয়ে থাকে ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ ভারতের। বিশ্বরেকর্ডের ঈর্ষণীয় আসনে বসার পথে সাতক্ষীরার এ তরুণ তুর্কি ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ তছনছ করে দেন। একে একে তার শিকারে পরিণত হয় রোহিত শর্মা, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়না, এ আর প্যাটেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবিন্দ্র জাদেজা। এর জন্য ১০ ওভারে তার খরচ হয় মাত্র ৪৩ রান। অভিষেকে মুস্তাফিজ ৫ উইকেট পেয়েছিলেন ৫০ রানে। সেই ম্যাচে তার শিকার রোহিত, আজিঙ্কা রাহানে, রায়না, রবিন্দ্র জাদেজা ও অশ্বিন।

মুস্তাফিজ আর ভিটরি ছাড়া প্রথম দুই ম্যাচেই ৫ উইকেট নেই আর কারও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিদেল এডওয়ার্ডস অভিষেকে ৬ উইকেট পেলেও পরের ম্যাচে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। পাশাপাশি মুস্তাফিজ বাংলাদেশেও ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে! মুস্তাফিজের আগে অভিষেকে ৫ উইকেট পাওয়া একমাত্র বাংলাদেশী বোলার তাসকিন আহমেদ দ্বিতীয় ম্যাচে পেয়েছিলেন ২ উইকেট।

যদি অভিষেকের সীমানা ছাড়িয়ে বিবেচনায় নেওয়া হয় গোটা ক্যারিয়ার, সেখানেও বাংলাদেশে অনন্য মুস্তাফিজ। ওয়ানডেতে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের আর কারও! কাছাকাছি যেতে পেরেছিলেন কেবল আব্দুর রাজ্জাক। ২০১০ সালে জিস্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে নিয়েছিলেন ৫ ও ৪ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে একাধিকবার ৫ উইকেট পাওয়ার কীর্তিও কেবল রাজ্জাক আর মুস্তাফিজেরই। চারবার ৫ উইকেট পেয়েছেন রাজ্জাক, ২ বার নিলেন মুস্তাফিজ। একবার করে পেয়েছেন আফতাব আহমেদ, ফরহাদ রেজা, মাশরাফি মুর্তজা, মোহাম্মদ রফিক, রুবেল হোসেন, জিয়াউর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।

ভিটরি ও মুস্তাফিজের ছাড়া ওয়ানডে ইতিহাসে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট আছে আর কেবল ৮ জন বোলারের। প্রথম নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার গ্যারি গিলমোর, ১৯৭৫ বিশ্বকাপে। এরপর গিলমোরের সঙ্গী হয়েছেন শ্রীলঙ্কার অশান্থা ডি মেল, পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস, আকিব জাভেদ, আজহার মাহমুদ, সাকলায়েন মুশতাক, অস্ট্রেলিয়ার রায়ান হ্যারিস ও মিচেল স্টার্ক। ওয়াকার আবার এখানে অনন্য। টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিন দফায়। একবার আবার নিয়েছিলেন টানা তিন ম্যাচে ৫ উইকেট।

মুস্তাফিজুরের বোলিং ফিগার (৪৩/৬) ওয়ানডেতে বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা। এই তালিকায় সবার ওপরে মাশরাফি; ২০০৬ সালে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ২৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় সেরা ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গড়া রুবেল হোসেনের ২৬/৬।