নাছির উদ্দিন ঃ
সারাদিন বাইরে থাকলেও বেলা শেষে সকল শিক্ষার্থীকে ঘরে প্রবেশ করে পড়ার টেবিলে বসতে হবে। পড়া শোনায় মনযোগী হয়ে পরদিনের পাঠ চুকিয়ে প্রত্যেককে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে এমনটা মন্তব্য করেছেন মীরসরাইয়ের সাংসদ, গৃহয়ান ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। বৃহস্পতিবার ২৮ ফেব্রুয়ারী মীরসরাইয়ের মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যখন পড়াশোনা করেছি তখন, ক্লাস শেষে বাড়ী ফিরে পরোক্ষনে বাইরে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই বাড়ী ফিরে পড়ার টেবিলে বসতাম। কিন্তু বর্তমানের চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। এখনকার শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা-রাতে বাইরে ঘোরাফেরা করে দোকান পাটে অযথা সময় নস্ট করে। তাই তোমাদের প্রতি আমার আহবান তোমরা আগেকার আমাদের মত দিনে ফিরে যাও। তিনি কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের ভিবিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে যে ভর্তি পরীক্ষা হয় তা খুব কঠিন। সেখানে ভর্তির যোগ্যতায় টিকার কথা শহরের নামি দামি কলেজ শিক্ষার্থীরা। কারণ তাদের অভিভাবকরা সন্তানের শিক্ষায় যে পরিমানে ব্যয় করে এবং যতœনেয়, সে তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা তার সুযোগ অনেক কম পায়। সেক্ষেত্রে অজপাড়া গাঁয়ের এই কলেজ থেকে যে শিক্ষার্থীরা বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি সাধুবাদ জানান।
এদিকে আবহাওয়ার বৈরীতাকে উপেক্ষা করে সকাল থেকে দিনব্যাপী মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে মহাজনহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সকাল থেকে ঘুড়ি ঘুড়ি বৃস্টি মাথায় নিয়ে শিক্ষার্থীরা মাঠে সমবেত হয়। প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্ধ সালাম গ্রহণ করার জন্য মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। পরে ৩ শাখার স্কাউট শিক্ষার্থীরা অতিথিবৃন্দকে সালাম জানান। পরে তাদের খেলাধুলার কিছু অংশ অতিথিদের সামেন উপস্থাপন করে। এসময় অতিথি বৃন্দ তাদের পরিবেশনা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন। পরে বিজয়ীদের কয়েকজনের হাতে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথি বৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ শাখার ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক আজমল হোসেন ও স্কুল শাখার সিনিয়ল শিক্ষক লাল বাহাদুর শর্মার যৌথ সঞ্চালনায় এবং কলেজের অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এস রহমান ট্রাস্টের সদস্য মীর আলম মাসুক, মীরসরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক জহির উদ্দিন ইরান, বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ভিপি নিজাম উদ্দিন, ৪ নং ধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মো. জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান, ১২ নং খৈয়াছরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল, ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনার তত্বাবধানে ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন সমাজ-বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক নোমান মো. নিজাম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মানের জন্য স্থানীয় বাসিন্দা মরহুম নজির আহমদের ছেলে আবুল কাশেস ভূঁইয়া ১ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় ধাপে ৫০ লক্ষ টাকার অনুদানের চেক প্রধান অতিথির হাতে তুলেদেন তার ভাই আবুল খায়ের মো. জাহাঙ্গীর ভুঁইয়া।
এছাড়াও প্রধান অতিথি তার কলেজ থেকে পাশ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে পড়–য়া তিন শিক্ষার্থীকে নগদ ১০ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন। আলোচনা সভা শেষে স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মন-মুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।