দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া আর সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী এ্যাড: খুরশীদ আলম খান।বুধবার মায়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পর দুদক আইনজীবি সাংবাদিকদের জানান, মায়ার সংসদ সদস্যপদে থাকার কোন বৈধতা নেই। তিনি আর সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন না।দুদক আইনজীবি বলেন, রায়ের পর মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সংসদ সদস্য পদ থাকা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা প্রয়োজন।আ্ইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রায়ের ফলে সংসদ সদস্যপদের সাথে মন্ত্রিত্বও অবৈধ হলো মায়ার জন্য। ফলে তিনি আর মন্ত্রীত্ব পদে থাকতে পারবেন না। তবে মায়ার আইনজীবি আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেছেন, বিচারাধীন বিষয় বিধায় সংসদ সদস্যপদ বাতিল হবে না।মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ২০০৮ সালে জ্ঞাত আয়ের বাইরে অবৈধভাবে ৬ কোটির বেশি টাকার সম্পদ অর্জনের মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। রায় ঘোষণার পর মায়া পলাতক ছিলেন।২০১০ সালের অক্টোবরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কেবলই আইনি প্রশ্নে ওই রায় বাতিল করেন। একইসাথে মামলাটি হাইকোর্টে নতুন করে শুনানির আদেশ দেন আপীল বিভাগ।দুদক এর বিরুদ্ধে আপিল করে। ১৪ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন। এরপর আজ আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানে বলা আছে, কারও সদস্যপদ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে স্পিকার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন এবং তাদের মতই চূড়ান্ত হবে। এখানে কোনো বিতর্ক দেখা দেয়ার সুযোগ নেই। আপিল বিভাগের রায় দেয়া মাত্রই গত ১৪ জুনই মায়ার মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়ে গেছে।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৩ জুন রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির এই মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২৫ অক্টোবর মায়া, তাঁর স্ত্রী পারভীন চৌধুরী, দুই ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী ও রাশেদুল হোসেন চৌধুরী এবং সাজেদুলের স্ত্রী সুবর্ণা চৌধুরীকে আসামি করে দুদক চার্জশীট দেয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯ হাজার টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। ৫ কোটি ৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে অর্জন করে ৬ কোটি ২৯ লাখ ২৩ হাজার টাকার সম্পদ নিজেদের দখলে রেখেছেন। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করলেও মামলার বাকি আসামিদের খালাস দেন।