শ্রীলঙ্কায় মুসলমানদের ওপর হামলা চালিয়েছে বৌদ্ধরা। তারা পুড়িয়ে দিয়েছে মুসলমানদের দোকানপাট, বাড়িঘর। ঘটনার সময় বৌদ্ধরা মুসলিমবিরোধী সেøাগান দেয়। মুসলমানদের বসতি আছে এমন গ্রামে তারা গ্যাসবোমা ও ইটপাটকেল ছুড়েছে। এর নিন্দা জানিয়েছে ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি, তামিলনাড়ুর ডিএমকে প্রেসিডেন্ট এম করুনানিধি। এ খবর দিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস, আরব নিউজ ও পিটিআই। এতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর আলুথগামায় বেশ কিছুদিন ধরে বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারই রেশ ধরে সৃষ্ট দাঙ্গায় মারা গেছে তিন জন। আহত হয়েছে ৭৮ জন। রোববার সৃষ্ট দাঙ্গায় নেতৃত্ব দেয় বোডু বালা সেনা নামে কট্টর বৌদ্ধ একটি গ্রুপ। এতে নেতৃত্বে ছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। এ গ্রুপটির নামের অর্থ হলো বৌদ্ধ ক্ষমতা শক্তি। তারা ওয়েলিপিতিয়া গ্রামের মুসলমানদের অনেক বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। ওই গ্রামের মানুষ মিলে সেখানে একটি মসজিদ সুরক্ষা দেয়ার চেষ্টা করছে। একটি সূত্র মতে, তখন তিনটি মসজিদ ও মুসলমানদের আরও অনেক উপাসনালয় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ওই গ্রামের এম. হোসেন বলেছেন, বৌদ্ধরা দু’ ঘণ্টা ধরে হামলা চালিয়েছে। মানুষ মারা না যাওয়া পর্যন্ত পুলিশ দেখা যায় নি। সোমবার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় শুধু দেখা গেছে পুলিশ। সোমবার ওই এলাকার মুসলমানরা বলেছেন, তাদের জীবনধারা চিরদিনের জন্য পাল্টে গেছে। হামলাকারীরা ওই এলাকায় মুসলমানদের শেষ করে দিয়েছে। এমন কথা বলেন এম ফারিনা নামে আরেক জন। তিনি আরও বলেন, রোববার সন্ধ্যায় যখন বৌদ্ধরা মুসলমানদের দোকান ও বাড়িতে হামলা চালায় তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখছিল। শ্রীলঙ্কা সরকারের এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা দেখে এর নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির আইনমন্ত্রী রাউফ হাকিম। তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বৌদ্ধদের ওই র্যালি প্রতিরোধে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ৭২ ঘণ্টা ধরে। তিনি বলেন, আমি লজ্জিত। আমি আমার লোকদের রক্ষা করতে পারি নি। মুসলমানদের ওপর এমন হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ওআইসি। তারা বলেছে, শ্রীলঙ্কায় আলুথগামা, বেরুওয়ালা ও দ্রাগা নগরে মুসলমানদের ওপরে যে সহিংস হামলা হয়েছে তা ভীষণ উদ্বেগের। লিখিত এক বিবৃতিতে ইয়াদ মাদানি বলেছেন, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে হামলা এবং হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় মুসলমানদের বসবাস দীর্ঘদিনের। তারা শান্তি ও সম্প্রীতিতে বসবাস করছে। তারা দেশপ্রেমিক।