মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আত্মনিয়োগ করুন : শেখ হাসিনা

image_211098.hasina it
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি দেশবাসীকে বঙ্গবন্ধুর কাক্সিক্ষত ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে এ আহবান জানান।প্রধানমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ১৭এপ্রিল এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়।তিনি বলেন,’৭১-এর ১৭এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আ¤্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এ দিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ অনুমোদন করা হয়। সেদিন থেকে এ স্থানটি মুজিবনগর নামে পরিচিতি লাভ করে বলে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী শুরু হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ। ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দলসমূহ, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ এবং তদানীন্তন ইপিআরসহ সকল শ্রেণি-পেশার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রেখে এই সরকার দীর্ঘ নয় মাস দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রশক্তির সহায়তার চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে আড়াই মাসের ব্যবধানে ৩ নভেম্বর জেলখানায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিল না। আইনের শাসন ও জনগণের অধিকার সামরিক-স্বৈরাচারের বুটের তলায় পিষ্ট হচ্ছিল। ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে সরকার গঠনের পর দেশে আবারও গণতন্ত্র ফিরে আসে।প্রধানমন্ত্রী ‘ঐতিহাসিক এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ চার জাতীয় নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এছাড়া তিনি সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।’শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীদের প্রচলিত আদালতে বিচার ও রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি দায়মুক্ত হয়েছে। জেলখানায় নিহত ৪ জাতীয় নেতার হত্যা মামলার পুনর্বিচারের কাজ চলছে। মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে সকল ক্ষেত্রে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি’। গত ছয় বছরে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যবিমোচন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বৈদেশিক সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ‘আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছি’।শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামাত জোট, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত এবং বিএনপি নেত্রী ও তাঁর পরিবারকে দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচানোর জন্য রাজনীতির নামে জঙ্গি স্টাইলে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। দেশব্যাপী নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।দেশের জনগণ তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বাধীনতার চেতনা ও উন্নয়ন বিরোধী এ অপরাজনীতির বিরুদ্ধে জনগণ আজ একতাবদ্ধ বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।