বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে এগিয়েছে বাংলাদেশ

pic-23_144818

 

অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও সুযোগ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। এমনকি নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বের শীর্ষ দশেও উঠে এসেছে এ দেশটি। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডাব্লিউইএফ) ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৪’-তে এ চিত্র ফুটে উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে এসে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠায় সার্বিকভাবে বেশ ভালো উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের এ সূচকে বিশ্বের ১৪২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৮তম স্থানে উঠে এসেছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৭৫তম এবং ২০১২ সালে ছিল ৮৬তম। লিঙ্গ অসমতা সূচক তৈরি করা হয়েছে চারটি ভিত্তির ওপর। বিষয়গুলো হচ্ছে স্বাস্থ্য এবং বেঁচে থাকা, শিক্ষায় অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং রাজনীতিতে অংশগ্রহণ।
লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে এগিয়েছে বাংলাদেশ
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং সুযোগ, শিক্ষায় অর্জন এবং স্বাস্থ্য খাতেও উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক অংশগ্রহণে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৭তম, শিক্ষায় ১১১তম। বলা হয়, লিঙ্গবৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম এগিয়ে যাওয়া দেশ। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সেকেন্ডারি শিক্ষায়ও নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১২২তম। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো সাফল্য দেখা যায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। এতে বাংলাদেশের অবস্থান ১০তম। বলা হয়, গত ২১ বছর ধরেই বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে নারী। তবে নারীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকানা বা কোনো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তা হওয়ার দিক থেকে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।
বৈশ্বিক এ তালিকায় শীর্ষ পাঁচে রয়েছে আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন এবং ডেনমার্ক। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ২০তম স্থানে। এক বিবৃতিতে ডাব্লিউইএফের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস সয়েব বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনেই লিঙ্গ সমতা অর্জন করা জরুরি। সেসব দেশই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারবে যেসব দেশে নারী-পুরুষ মিলিয়ে সব মেধাবীরাই অর্থনীতিতে অবদান রাখার সমান সুযোগ পাবে।’ তালিকায় তলানিতে রয়েছে ইয়েমেন, পাকিস্তান এবং চাদ।
এ বছরের সূচকে ১১৪তম স্থানে এসেছে ভারত। যদিও গত বছর এ দেশটির অবস্থান ছিল ১০১তম। প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক বছরে অর্থনৈতিক গতি এলেও এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হতে হয় ভারতের নারীদের। তালিকায় চীনের অবস্থান ৮৭তম এবং ব্রাজিলের অবস্থান ৭১তম। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। এ দেশটির অবস্থান নবম।
ডাব্লিউইএফের মতে, তাদের গত ৯ বছরের মূল্যায়নে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে লিঙ্গবৈষম্য সামান্যই কমেছে কর্মক্ষেত্রে। ২০০৬ সালে যেখানে অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন সুযোগ ছিল ৫৬ শতাংশ, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৬০ শতাংশ। সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী এ ব্যবধান পূর্ণভাবে কমিয়ে নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠা করতে অন্তত ৮১ বছর সময় লাগবে।