শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

লারাকে ছাপিয়ে তামিম

1_28544

শুধু গড় রানের জন্য ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে আছেন স্যার ডন ব্রাডম্যান। মাত্র ৪ রানের জন্য অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট লিজেণ্ডের টেস্ট ক্রিকেটের গড় হয়নি ১০০! ৫২ টেস্টে ২৯ সেঞ্চুরির রেকর্ডও অবিশ্বাস্য। একই রকম অভিশ্বাস্য ভারতীয় ক্রিকেট লিজেণ্ড শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ডও। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে টেণ্ডুলকারের সেঞ্চুরি ১০০টি। এসব রেকর্ড হয়তো রয়ে যাবে আজীবন। তেমনি ‘ক্রিকেট যুবরাজ’ ব্রায়ান লারার রেকর্ডও টিকে থাকবে অনাদিকাল। ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার লারা- যিনি টেস্টে এক ইনিংসে করেছেন ৪০০ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছেন ৫০১ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস! এ দুটি ইনিংসে ক্রিকেট সারাজীবন স্মরণ করবে লারাকে। স্কোর দুটির বিবেচনায় লারার তুলনায় আসেন না অবিসংবাদিত এই ক্রিকেটার। কিন্তু কিংসটাউনের আরনেস ভেলের পরিসংখ্যানের হিসাবে লারাকে পিছনে ফেলেছেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। কীভাবে?

লারা ও তামিম দুজনেই খেলেছেন কিংসটাউনে। ১৯৯৭ সালে কিংসটাউনের অভিষেক টেস্টে খেলেছিলেন ক্যারিবীয় যুবরাজ। তামিম খেলেছেন তার ১২ বছর পর, ২০০৯ সালে। রাতে শুরু হওয়া টেস্টের আগে কিংসটাউনে হয়েছেই এই দুটি টেস্ট। ১৭ বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কা টেস্টে কোনো ফল হয়নি। টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানো ১১৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লারা। তার সেঞ্চুরিতেই ড্র করেছিল ব্যাকফুটে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১ রান করেছিলেন লারা। ওই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে স্কোর ছিল ১৪৭। শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ২২২। ৭৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৪৩ রান করেছিল ক্যারিবীয়রা। লারা ১১৫ রান করেছিলেন ২০৭ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায়। ২৬৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ২৩৩।

২০০৯ সালে ক্যারিবীয় সফরে কিংসটাউনে প্রথম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। অবশ্য আরনেস ভেলে ২০০৪ সালে দুটি ওয়ানডে খেলেছিল টাইগাররা। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই খেলতে নামে টেস্ট। প্রথমে ব্যাট করে ২৩৮ রান করেছিলেন তামিমরা। তামিমের ব্যাট থেকে বেরিয়েছিল ১৪ রান। স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৩০৭ রান। ৬৯ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৪৫ রান করে টাইগাররা। তামিম খেলেন ১২৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ২৪৩ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১৭টি চার। ২৭৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ঘূর্ণিতে ১৮১ রানে গুঁড়িয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ জয় পায় ৯৫ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়। সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন বাংলাদেশের ড্যাসিং ওপেনার। ১৯৯৭ সালে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন কার্ল হুপার। এসব সমীকরণ মিলিয়েই কিংসটাউনের আরনেস ভেলে ক্রিকেটের যুবরাজ লারার চেয়ে এগিয়ে তামিম।

কিংসটাউনের টেস্টটি অনেকগুলো কারণেই স্মরণীয় বাংলাদেশের কাছে। ওই টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার। কিন্তু প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬.৩ ওভার বোলিংয়ের পর ইনজুরিতে পড়েন। ওই শেষ টেস্ট খেলা মাশরাফির। এরপর গত পাঁচ বছরে অনেক ওয়ানডে ও টি-২০ খেলেছেন। কিন্তু নামা হয়নি টেস্টের সাদা পোশাকে। অভিষেক হয়েছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও রুবেল হোসেনের। বাংলাদেশের অসাধারণ জয়ের অন্যতম নায়ক মাহমুদুল্লাহ দুই ইনিংসে উইকেট নিয়েছিলেন ৮টি। রুবেল নিয়েছিলেন ৩টি। এবারও তামিমের সঙ্গে রয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার। তামিমের মতো দুজনের কাছেও টেস্টটির আবেদন একেবারেই আলাদা।