রাশিয়ার কাছে বিক্রি করা যুদ্ধ জাহাজ সরবরাহ স্থগিত করেছে ফ্রান্স। ১৬০ কোটি ডলারের বিনিময়ে ফ্রান্স থেকে হেলিকপ্টার বহনকারী বেশ কটি যুদ্ধজাহাজ ক্রয়ে চুক্তি করেছিল রাশিয়া। এখন প্রথম দফায় দুটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর যে পরিকল্পনা ছিল তা স্থগিত করেছে ফ্রান্স।
চুক্তি অনুযায়ী অক্টোবরের শেষের দিকে প্রথম দফায় হেলিকপ্টার বহনকারী দুটি যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করার কথা ছিল দেশটির। পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থানকে ইওরোপের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি উল্লেখ করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স।
রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে অপ্রীতিকর উল্লেখ করে বলেছেন, এতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে পরিকল্পিত আধুনিকায়ন থেমে থাকবে না।
যুদ্ধজাহাজ কেনার ব্যাপারে রাশিয়ার সাথে ফ্রান্সের ১৬০ কোটি ডলারের চুক্তির বিষয়ে ব্যাপক আপত্তি ছিল ইউরোপের দেশগুলোর। সেই আপত্তি এতদিন উপেক্ষা করেছে ফ্রান্স। পূর্ব ইউক্রেনে বিদ্রোহীদের রাশিয়া সহযোগিতা করছে এমন অভিযোগে রাশিয়ার ওপর ইউরোপের অবরোধ আরোপের পরও যুদ্ধজাহাজ ক্রয়ের চুক্তি বহাল রেখেছিল ফ্রান্স।
তবে পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনারা সরাসরি অংশ নিচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠার পর ফ্রান্সের ওপর বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছিল। এখন পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থানকে ইওরোপের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি উল্লেখ করে এমন সিদ্ধান্ত নিলো ফ্রান্সের সরকার।
ইউক্রেনের সরকার ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
অন্যদিকে পূর্ব ইউক্রেনে একটি যুদ্ধবিরতির কথাবার্তায় বেশ অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর আগে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সমঝোতার কথা ঘোষণা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো।
ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র বলেছেন, দু’জনের টেলিফোনে যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে আলাপ হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনায় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ওয়াল্টার স্টাইমায়ার বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে বলে যা শোনা যাচ্ছে, ছোট হলেও তা একটি আশার আলো। ওদিকে পুতিন ইউক্রেনের রুশ পন্থী বিদ্রোহীদের অগ্রসর না হবার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
তিনি ইউক্রেনের সরকারকেও সেনা প্রত্যাহার করার আহবান জানিয়েছেন। পুতিন বলেছেন, রক্তক্ষয় বন্ধে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে আশা করি দু’পক্ষই সমন্বিত কিছু পদক্ষেপ নেবে। তিনি যুদ্ধবিরতির একটি সাত দফা প্রস্তাব করেছেন।
তবে এখনি পুতিনকে বিশ্বাস করা যাবে না এমন বক্তব্যও দিয়েছেন পেত্রো পোরোশেঙ্কো।
গত এপ্রিল মাসে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রাইমিয়া অঞ্চলটি দখল করার পর রুশ পন্থী এই বিদ্রোহীরাও এই দুই এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরু করে। পূর্ব ইউক্রেইনে ক্রমাগত অগ্রসর হয় তারা। সরকারি বাহিনী সাথে যুদ্ধে এ পর্যন্ত দুহাজারের বেশি সেনা ও বিদ্রোহী হতাহত হয়েছে।– বিবিসি।