শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

যেভাবে শুরু করেছি তা ধরে রাখতে পারিনি

42409_s1

এক বছর আগেও বাংলাদেশ দলের সফল অধিনায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহীম। কিন্তু ২০১৪ সালটি যেন সম্পূর্ণ বিপরীত। দেশের মাটি থেকে শুরু করে বিদেশের মাটি- সব জায়গাতেই চরম ব্যর্থতা। দেশে শ্রীলঙ্কার সফর থেকে শুরু করে বিশ্বকাপ টি- টোয়েন্টিতে ক্রমাগত ব্যর্থতায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল বাংলাদেশ দলের। এরপর আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাড়ি জমিয়েছিল কিছুটা সফলতার আশায়। কিন্তু সেখানেও লেজেগোবরে অবস্থা। টেস্ট ও ওয়ানডেতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা নিয়ে গতকাল দেশে ফিরেছেন মুশফিক বাহিনী। হযরত শাহ্‌জালাল বিমানবন্দরে সেই ব্যর্থতার দায় মাথায় তুলে নেননি মুশফিকুর রহীম যেমনটা করেছিলেন জিম্বাবুয়ে সফর শেষে। তবে সঙ্গে প্রতিবারের মতো ব্যাখ্যাও দিয়েছেন  সেই বাজে পরাজয়ের। তার  কথোপকথনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: গত ৯ মাস ধরে ব্যর্থতাই সঙ্গী। এই দায়ভার অধিনায়ক হিসেবে নিতে আপনি প্রস্তুত কিনা?
মুশফিক: এটা আমার ওপর নির্ভর করে না। আমি এটা এর আগেও বলেছি। খারাপ সময়ে ছেড়ে যাওয়াটা খুব কঠিন। তবে ভাল সময়  যেটা ছিল সেটা যেন ফিরে আসে- সেটা নিয়েই আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে। আশা করবো সেই সময়টা আমি পারবো। আমি আসলে সিদ্ধান্ত নেয়ার কেউ না। যারা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তারাই বলেন। আমার দলের কথা বলতে পারেন, আমাদের এই বছরটা আসলে খারাপ যাচ্ছে। এই সময়টা আরও একসাথে থাকা উচিত। এটা আমরা করার  চেষ্টা করছি। সবার সহযোগতিা চাচ্ছি।
প্রশ্ন: এই ভাবে না পারার কি কোন কারণ আছে।
মুশফিক: কারণতো অবশ্যই আছে। আমার মনে হয় খুব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা আউট হয়ে গেছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে  যেখানে ব্রেকথ্রেু দরকার ছিল সেখানে তা দিতে পারেনি  বোলাররা। পরিকল্পনা যেভাবে ছিল সেভাবে আসলে বোলিং করতে পারিনি আমরা ওরাও ভাল  খেলেছে। ওভারঅল বলবো আমাদের যে দায়িত্ব ছিল সেখানে একটু ঘাটতি ছিল।
প্রশ্ন: কোন বিষয়গুলো বাংলাদেশ দলের অভাব বলে মনে করেন?
মুশফিক: অফ দ্য ফিল্ড আমার মনে হয় না কিছু মিসিং আছে। মাঠের  ভেতর আমাদের  যে  রেজাল্টটা পাওয়া উচিত ছিল দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয় নাই। ওয়ানডেতে আমরা প্রথম ম্যাচে যেভাবে শুরু করেছিলাম,  সেটি ধরে রাখতে পারিনি। আর দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে যা চেজ করা সম্ভব ছিল সেখানেও আমরা ভালমতো ব্যাটিং করতে পারিনি। ওয়ানডেতে আমাদের ব্যর্থতা ছিল। আর টেস্টে মনে হয় আমরা শুরু  যেভাবে করেছিলাম তা ধরে রাখতে পারিনি। পুরো সিরিজে আমাদের শিক্ষণীয় ব্যাপার হতে পারে যে, কিছু সময় ভাল  খেলেছি আবার কিছু সময়  খেলিনি। এটা খুব কঠিন। একটা শক্তিশালী দলের সঙ্গে আপনি যখন জিততে চাইবেন তখন আপনাকে সময় ধরে ভাল খেলতে হবে ধারাবাহিকভাবে। এটাই আমরা করতে পারিনি।
প্রশ্ন: হারের পর জবাবদিহিতা কমে গেছে কিনা?
মুশফিক: জবাবদিহিতা সব সময়ই থাকে। পারফরম্যান্স খারাপ হলেই জবাবদিহি করতে হয়। খারাপ হলে দোষটা আমাদেরই, বিশেষ করে আমার। আর সেদিক থেকে বলবো যেভাবে রেজাল্ট হওয়া উচিত ছিল সেভাবে হয়নি। কিন্তু কোচ-আমাদের যেভাবে  চেষ্টা ছিল এখানে কোন ত্রুটি ছিল না।
প্রশ্ন: সব ফরম্যাটে আলাদা অধিনায়ক কি বাংলাদেশে প্রয়োজন?
মুশফিক: এটা আসলে  বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিষয়।  এই ব্যাপারে উনারাই ভাল বলতে পারবেন।  যেটা হলে দলের ভাল হবে আমিও একমত থাকবো।
প্রশ্ন: আপনার চাপ কমানোর জন্য বিসিবি সিদ্ধান্ত নিতে পারে?
মুশফিক: এটা তাদের সিদ্ধান্ত। তারা যদি ভাল মনে করেন তাহলে অবশ্যই করবেন।
প্রশ্ন: দরকার হলে বড় পরিবর্তন হওয়া দরকার,  সেটা কেমন হতে পারে?
মুশফিক: ম্যাসিভ  চেঞ্জ বলতে আমাদের টিম কম্বিনেশনটা একটু চেঞ্জ হওয়া দরকার।  যেহেতু আমাদের রেজাল্ট হচ্ছে না। অবশ্যই আমাদের কন্ডিশন এবং কাদের বিপক্ষে  খেলা কোন অবস্থায় এবং  কোথায় খেলা হচ্ছে তার ওপর পারফরমেন্স নির্ভর করে। সেদিক থেকে আমরা কিছু  চেষ্টা করেছিলাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্যুরে। কিন্তু সফল হইনি। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পরবর্তী ট্যুরে আমাদের চেষ্টা থাকবে। সফল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েই আমরা মাঠে নামবো। আমার মনে হয় ব্যাপার  খেলোয়াড়দের  সমর্থন করার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। একজন  খেলোয়াড়কে ড্রপ দেয়াটা বড় সমাধান নয়। সবচেয়ে কষ্টের কাজ হলো তাকে ফর্মে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।