মেঘনায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ এম ভি মিরাজ-৪ পুরোপুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর দেড়টায় কাত হয়ে থাকা লঞ্চটিকে সোজা করে তীরের দিকে টেনে আনা হয়। লঞ্চটি উদ্ধারের পর পরই এর ভিতর থেকে আরো তিনটি লাশ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। এই নিয়ে মোট লাশের সংখ্যা দাঁড়ালে ৫৩। গত মধ্যরাত থেকে এ পর্যন্ত আরো ২২ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছেন ডুবুরিরা। এর মধ্যে ৪২টি লাশ স্বজদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব তথ্য দিয়ে গজারিয়ার ইউএনও ড. এ টি এম মাহাবুবুল করিম জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ১১ জন নিখোঁজের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।এর আগে সকাল ৯টায় লঞ্চটি তীর থেকে ২০ গজ দূরে কাত করা অবস্থায় রেখে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন বিআইডাব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্বজনহারা জনতা উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ে হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তাঁরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত না হওয়া যাবে নিখোঁজ কেউ নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলবে। তাঁরা বলেন, স্বজনহারাদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সহযোগিতার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদলের নির্দেশে উদ্ধার কাজ পুনরায় শুরু হয়।লঞ্চটি উদ্ধারের পর মেঘনা তীরের খোলা আকাশের নিচে অপেক্ষমান স্বজনদের গগনবিদারী আহাজারিতে মেঘনা পারের বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। তারা এমভি মিরাজ ও এর আশপাশের এলাকায় লাশ খোঁজা অব্যাহত রেখেছে। নিহতদের বেশিরভাগই শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাদের দাবি এখনো শতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুরের কাছে ঝড়ের কবলে পড়ে মেঘনায় আড়াই শ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪। লঞ্চটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শরীয়তপুরের সুরেশ্বরের উদ্দেশে ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়।