বিশ্বকাপে খেলতে আর কোনো বাধা নেই রুবেলে হোসেনের। রোববার জামিন পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের এই পেসার। রুবেলের আইনজীবীরা কাল জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমরুল কায়েস শুনানি শেষে অভিযোগপত্র দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। মিরপুর মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযোগপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় চার মাসের মতো সময় পাচ্ছেন রুবেল। অখ্যাত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তিন দিন জেল খেটে রোববার ছাড়া পেয়েছেন রুবেল। আজ বিশ্বকাপের অনুশীলনে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন এই ডান-হাতি পেসার। রুবেলের মুক্তিতে খুশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। তার মুক্তির জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছে বিসিবি। একটি সূত্র জানিয়েছে, রুবেলের মুক্তির জন্য সব ধরনের সহায়তা করেছে বিসিবি। রুবেলের জামিন সম্পর্কে বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেন, ‘আমাদের ৫০ ভাগ পেসার ইনজুরিতে থাকে। তার মধ্যে আমরা যদি কোনো ফিট পেসারকে ধরি, সেখানে একনম্বরে থাকবে রুবেল। তার পারফরম্যান্সও ভালো। সে পাওয়ার প্লেতে ভালো বোলিং করে। অভিজ্ঞ বোলার। তার জামিনে আমি খুবই খুশি। একটা বিষয় নিয়ে ওর চিন্তা (জামিন হবে কি হবে না) হচ্ছিল। আল্লাহর রহমতে সে জামিন পেয়েছে। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সুখবর। বিশ্বকাপ পর্যন্ত ওর আর কোনো টেনশন থাকবে না এবং রুবেল দলকে শতভাগ দিতে পারবে।’রুবেলের জামিন পাওয়ার পর প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘রুবেল হোসেন জামিন পাওয়ায় আমরা খুশি। সত্যি বলতে, তার জামিনে আমরা এখন বেশ নির্ভার। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও স্বস্তিবোধ করছে। বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে রুবেল হঠাৎ করে জেলে যাওয়ায় আমরা বেশ চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। আমাদের অনেক রকম বিকল্প নিয়ে ভাবতে হচ্ছিল।’
বিশ্বকাপে রুবেলের খেলা নিয়ে আকরাম খান বলেন, ‘সভাপতি (নাজমুল হাসান) বলেছেন, জামিন পেলে তার বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা বেশি। তাই এখন আর কোনো সমস্যা নেই। এখন তার বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনটাই বেশি।’ তিনি বলেন, ‘আমি রুবেলের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, আগামী তিন মাস সে জামিনে থাকবে এবং এ সময়ের মধ্যে তার কোনো সমস্যা হবে না। ভালোভাবে বিশ্বকাপ খেলতে পারবে।’ শনিবার নাজমুল হাসান বলেছিলেন, সারা বছর আমরা ক্রিকেটারদের নজরদারির মধ্যে রাখব। নজরদারির বিষয়টা কী হতে পারে? আকরাম খান বলেন, ‘চুক্তির শর্তগুলোর চেয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই এ ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। সবাইকে সবকিছু বলে বোঝানো যায় না। নিজেস্ব চিন্তভাবনা থাকা উচিত। তবে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য ব্যক্তিগত জীবনে বা দেশের ক্ষতি না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখব।’ এর আগে মাঠের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে মনোবিদ ডেকেছে বিসিবি। এমন কর্মকাণ্ডের জন্যও কি বিসিবি মনোবিদের শরণাপন্ন হবে? সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘আগে বিসিবি মনোবিদ ডেকেছে। কিন্তু প্রত্যেক মানুষেরই জানা উচিত কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। যেহেতেু বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এখন বড় তারকা, তাই চিন্তাভাবনা করে চলা উচিত। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এর আগেও আমরা আলোচনা করেছি। এখনও করছি, পরবর্তী সময়েও করব।’ তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বোর্ডের কাছে অনুরোধ করব এই বিষয়গুলো মীমাংসা করা উচিত। ভবিষ্যতে ক্রিকেটারদের যদি এ ধরনের কোনো দোষ ধরতে পারে তাহলে বড় পদক্ষেপ নেয়া য়ায়।