নিজস্ব প্রতিনিধি :: মীরসরাই উপজেলায় বিজয়ের মাসের প্রথম দিন ‘১ ডিসেম্বর’ কে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে পালন করেছে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ মীরসরাই উপজেলা শাখা। গতকাল বুধবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হল কক্ষে এক সাংগঠনিক সভায় বক্তাগন ‘১ ডিসেম্বর’ কে মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসাবে গেজেট প্রকাশের জোর দাবি জানান।
সংগঠনের সভাপতি নয়ন কান্তি ধুম -এর সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক আবু জাপরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন মীরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক) বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা নাজমুল হোসেন চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের দাবি আদায়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
প্রধান বক্তা নাজমুল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় চেয়ারম্যান থাকেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তিনি আমাদের আপনজন, অথচ এই বিজয় মেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা অবহেলিত থাকেন৷ এটা মানা যায়না৷ আমরা প্রয়োজনে আমাদের অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি মহোদয়ের শরনাপন্ন হব।
সভাপতির বক্তব্যে নয়ন কান্তি ধুম
বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায়, অথচ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা সুবিধাবঞ্চিত। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়না, অসম্মানিত হতে হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অধিকারও নিশ্চিত করা হয়না। তিনি বলেন, এই যদি হয় অবস্থা তাহলে এটাকে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা না বলে অন্য নামে অভিহিত করা হোক। তিনি কমিটির আয়োজকদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা কমিটির সকলস্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়। আমাদের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীন হয়৷ অর্জিত হয় একটি সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। সেদিন যদি এই দেশের দামাল ছেলেরা, আমাদের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ না করত তাহলে এই দেশ স্বাধীন হতোনা৷ তাই সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ “১ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা দিবস” হিসাবে গেজেট প্রকাশ করুন। তিনি বলেন যেহেতু বিভিন্ন এলাকায়/উপজেলা কিংবা জেলা সমূহ বিভিন্ন দিন ‘হানাদার মুক্ত’ হয়। তাই ডিসেম্বরের ০১ তারিখ “মুক্তিযোদ্ধা দিবস” হিসাবে জাতীয়করণ করা হোক। মীরসরাই উপজেলা রাজাকার মুক্ত হয় ৮ ডিসেম্বর। তাই আগামী ৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবসে দেশের সকল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি এক হয়ে অনুষ্ঠান সফল করার উদাত্ত আহবানও জানান তিনি। এসময় তিনি সংগঠনের সকলের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধকালীন ১ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার, জননেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সুস্থ্যতা কামনা করেন এবং আগামীর সমৃদ্ধ মীরসরাই গঠনে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুব-উর রহমান রুহেলের হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। এছাড়া, আগামী বছর (২০২২ সাল) থেকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ প্রচারে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের জেলার সদস্য সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, উপজেলা প্রচার সম্পাদক ইয়াছিন উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক নূর উদ্দীন, যুগ্ম সম্পাদক নাহিদ হাসান চৌধুরী কমল,
নিজাম উদ্দীন মামুন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল বারী, এছাড়া বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলাউদ্দীন শিকদার, তৌহিদুল ইসলাম, মাইনুল হুদা রনি, জহির উদ্দীন, রিয়াজ উদ্দীন, মো. আনোয়ার করিম, মোহাম্মদ আলী (অপু), আবুল হোসেন ভাসানী, মোহাম্মদ ভূট্টু, রাসেল চৌধুরী, আক্তার হোসেন, প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।