নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ চট্টগ্রামের মীরসরাইতে আদিবাসী এক যুবকের মৃত্যুকে খুন বলে চালিয়ে মিথ্যা মামলায় স্বাক্ষী দিতে তার পরিবারকে হুমকী দেয়া হচ্ছে। হুমকী দাতাদের সনাক্ত করে বিচারের দাবিতে সোমবার (১আগষ্ট) শতাধিক আদিবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে অবস্থান নেয় এবং একটি লিখিত আবেদন করেন। পরে তারা উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আক্তার কাকলী ও মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে সম্ভারং ত্রিপুরার আবেদন সূত্রে জানা গেছে, তারা উপজেলার খইয়াছড়া ইউনিয়নের নয়দুয়ার এলাকার পাহাড়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। গত ২৫ জুলাই সকালে সে পাহাড়ে কাজ করতে যান। কাজ থেকে ফিরে এসে দেখেন ঘরে তার স্বামী সুমন ত্রিপুরা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এসময় তার চিকিৎসার জন্য একজন পল্লী চিকিৎসক ডেকে আনেন। পরে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। তার স্বামীকে কেউ হত্যা করেনি দাবি করেন। কিন্তু তার স্বামীর মৃত্যুকে খুন প্রচার করে একটি চক্র তাকে মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়ার জন্য হুমকী ধমকী দিয়ে আসছে। স্বাক্ষী না দিলে স্কুলে যাওয়ার পথে তার ছেলে মেয়েকে অপহরণের হুমকীও দিচ্ছে ওই চক্র। আদিবাসী পাড়ার সর্দার সুমন ত্রিপুরা জানান, মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে পাড়ার লোকজনকে সন্ত্রাসীরা হুমকী দিচ্ছে। স্কুলে যাওয়ার পথে ছেলে মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকী দিচ্ছে। ভয়ে পাড়ার অনেক ছেলে মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তার নামেও সুমনকে খুন করার মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। সুমন ত্রিপুরাকে কেউ খুন করলে সঠিক তদন্ত করে তা বের করারও দাবি জানান তিনি।
মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের সচিব মো.শফি জানান, আদিবাসী পাড়ার লোকজন দুইটি অভিযোগ দিয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন অফিসের কাজে চট্টগ্রামে আছেন। তিনি এলে আবেদন গুলো তাকে দেয়া হবে।
খৈইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, সুমন ত্রিপুরা অতিরিক্ত মদ পান করে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বলে আদিবাসী পাড়ার লোকজন আমাকে জানিয়েছে। অতিরিক্ত মদ পানে মারা যাওয়ার বিষয়টি আমি সাথে সাথে থানাকেও জানিয়েছি। সুমনকে খুন করা হয়েছে বলে এমন কোন তথ্য তার জানা নেই।
মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, আদিবাসী যুবক খুন হওয়ার বিষয় একটি পত্রিকায় দেখার পর পুলিশ নিজ উদ্যোগে বিষয়টি তদন্ত করেছে। ওই পাড়ায় কোন খুন ঘটনার আলামত পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত মদ পানে সুমন ত্রিপুরা অসুস্থ হয়ে মারা যায় বলে তিনি দাবি করেন।