একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে জানানো হয়, তার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি অভিযোগে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি সুস্পষ্ট। বাকি ৮টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। চারটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির আদেশ দেন। এছাড়াও রায়ে রুমি হত্যাসহ ৪টি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টা ৭ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ২০৪ পৃষ্টার রায় পড়া শুরু হয়।
তার বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসি দিয়েছে। গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র, অপহরণ ও বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কসিমুদ্দিন ও রুমি হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি হিসাবে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।দুই নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২২ আগস্ট নিজামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল-মাদানি স্মরণসভায় বক্তব্য দেন। তিনি এ সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের স্বাধীনতাকামীদের নিশ্চিহ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তারা সারাদেশে সংগঠিত হয়ে অপরাধ করতে থাকেন। যার দায় নিজামীর।চার নম্বর অভিযোগেবলা হয়েছে, একই বছরের ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর যশোর বিডি হলে ছাত্রসংঘের সভায় তিনি জিহাদের সমর্থনে বক্তব্য দেন। নিজামী ওই সভায় বক্তব্য দিয়ে নিরীহ স্বাধীনতাকামী বাঙালি হত্যার নির্দেশ দেন।ছয় নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজামীর নির্দেশে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগিতায় একই বছরের ৮ মে পাবনার সাঁথিয়া থানার করমজা গ্রামে লোক জড়ো করে নির্বিচারে সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়। নারীদের ধর্ষণ করা হয়।
ষোল নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিজামী একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ঊষালগ্নে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।রায় পড়ার শুরুতেই ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, আমরা অপেক্ষায় ছিলাম কবে রায় দিতে পারবো। এ জন্য অনেকে অনেক কথাই বলেছেন। ন্যায় বিচার ও আইনের শাসনের কথা আদালত বলতে পারেন, অন্য কেউ বলতে পারে না। আমরা টক-শো কিংবা রাস্তায় আদালতের বিষয়ে কোন কথা বলতে পারি না। মন্তব্য করার সময় আমাদেরকে জবাবদিহির কথা মনে রাখতে হবে।
এরপর নিজামীর মামলার সংক্ষিপ্ত রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক। পরবর্তী অংশ বিচাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন পড়া শুরু করেছেন। পরে রায়ের মূল অংশটি পড়েন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে নিজামীকে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেন কারারক্ষিরা। এর পর তাকে রাখা হয় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যে কোন ধরণের নাশকতা এড়াতে আজ রাজধানীসহ দেশব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মঙ্গলবার রাত থেকেই ঢাকায় রাস্তায় নেমেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার বাইরের জেলাগুলো, বিশেষ করে যেসব জায়গায় গত বছর ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও হয়েছিল, সেসব জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, নিজামীর রায়কে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। থাকছে তল্লাশি চৌকি, অতিরিক্ত টহল।উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য থাকলেও আসামি মতিউর রহমান নিজামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। এ কারণে রায় পিছিয়ে চতুর্থবারের মতো অপেক্ষমাণ রাখা হয়।গত বছরের ১৩ নভেম্বরও অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল মামলাটি। সেদিন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থানের দিন ধার্য থাকলেও হরতালের কারণে না আসায় সময় আবেদন খারিজ করে মামলার কার্যক্রম শেষ করে দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সমাপনী বক্তব্য শেষে রায় অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল।নিজামীর বিরুদ্ধে একাত্তর সালে পাবনার বিভিন্ন জায়গায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ মোট ১৬টি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়রে ওপর এবং ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অপরাধ কখনো তার নির্দেশে আবার কখনো তার আদেশে সংগঠিত হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টা ৭ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ২০৪ পৃষ্টার রায় পড়া শুরু হয়।
তার বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসি দিয়েছে। গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র, অপহরণ ও বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কসিমুদ্দিন ও রুমি হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি হিসাবে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।দুই নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২২ আগস্ট নিজামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক একাডেমি হলে আল-মাদানি স্মরণসভায় বক্তব্য দেন। তিনি এ সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের স্বাধীনতাকামীদের নিশ্চিহ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেন। এরপর তারা সারাদেশে সংগঠিত হয়ে অপরাধ করতে থাকেন। যার দায় নিজামীর।চার নম্বর অভিযোগেবলা হয়েছে, একই বছরের ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর যশোর বিডি হলে ছাত্রসংঘের সভায় তিনি জিহাদের সমর্থনে বক্তব্য দেন। নিজামী ওই সভায় বক্তব্য দিয়ে নিরীহ স্বাধীনতাকামী বাঙালি হত্যার নির্দেশ দেন।ছয় নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজামীর নির্দেশে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগিতায় একই বছরের ৮ মে পাবনার সাঁথিয়া থানার করমজা গ্রামে লোক জড়ো করে নির্বিচারে সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়। নারীদের ধর্ষণ করা হয়।
ষোল নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিজামী একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ঊষালগ্নে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।রায় পড়ার শুরুতেই ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, আমরা অপেক্ষায় ছিলাম কবে রায় দিতে পারবো। এ জন্য অনেকে অনেক কথাই বলেছেন। ন্যায় বিচার ও আইনের শাসনের কথা আদালত বলতে পারেন, অন্য কেউ বলতে পারে না। আমরা টক-শো কিংবা রাস্তায় আদালতের বিষয়ে কোন কথা বলতে পারি না। মন্তব্য করার সময় আমাদেরকে জবাবদিহির কথা মনে রাখতে হবে।
এরপর নিজামীর মামলার সংক্ষিপ্ত রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক। পরবর্তী অংশ বিচাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন পড়া শুরু করেছেন। পরে রায়ের মূল অংশটি পড়েন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে নিজামীকে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেন কারারক্ষিরা। এর পর তাকে রাখা হয় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যে কোন ধরণের নাশকতা এড়াতে আজ রাজধানীসহ দেশব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মঙ্গলবার রাত থেকেই ঢাকায় রাস্তায় নেমেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার বাইরের জেলাগুলো, বিশেষ করে যেসব জায়গায় গত বছর ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও হয়েছিল, সেসব জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, নিজামীর রায়কে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। থাকছে তল্লাশি চৌকি, অতিরিক্ত টহল।উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য থাকলেও আসামি মতিউর রহমান নিজামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। এ কারণে রায় পিছিয়ে চতুর্থবারের মতো অপেক্ষমাণ রাখা হয়।গত বছরের ১৩ নভেম্বরও অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল মামলাটি। সেদিন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থানের দিন ধার্য থাকলেও হরতালের কারণে না আসায় সময় আবেদন খারিজ করে মামলার কার্যক্রম শেষ করে দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের আইনজীবীদের সমাপনী বক্তব্য শেষে রায় অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল।নিজামীর বিরুদ্ধে একাত্তর সালে পাবনার বিভিন্ন জায়গায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ মোট ১৬টি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়রে ওপর এবং ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অপরাধ কখনো তার নির্দেশে আবার কখনো তার আদেশে সংগঠিত হয়েছে।