আর্জেন্টাইন ক্লাব স্যান লরেঞ্জোর জার্সি দেখতে অনেকটা বার্সেলোনার জার্সির মতোই। হঠাৎ করে কোনো বেখবর ফুটবলদর্শক মারাকেশের ম্যাচটা টিভিতে দেখতে বসলে নির্ঘাত ন্যু ক্যাম্পের ‘এল ক্লাসিকো’ ভেবে নিত! ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে বার্সেলোনার রঙেই মাঠে নেমেছিল স্যান লরেঞ্জো। ইউরোপীয়ান ফুটবলের উপর আধিপত্য বিস্তারের একটা সুযোগ ছিল ল্যাটিনদের। তবে বিশ্বকাপের মতোই এখানেও ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বই ফুটে উঠল। আর্জেন্টাইন ক্লাব স্যান লরেঞ্জোকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বজয় করে নিল গ্যালাকটিকো ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপীয়ান ক্লাব ফুটবলে দীর্ঘদিন ছড়ি ঘুরিয়েছে বার্সেলোনা। সেই ছড়ি যে এখন রিয়াল মাদ্রিদের দখলে তা প্রমাণিত হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগেই। চলতি বছরে চতুর্থ শিরোপা জিতে রিয়াল মাদ্রিদ আরও একবার ক্লাব ফুটবলে নিজেদের আসন পাকাপোক্ত করল। এটা তো কেবল একটা শিরোপা নয়, শ্রেষ্ঠত্বের সীলমোহরও। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। বিশ্ব শব্দটার সঙ্গে যতটা গৌরব তা কোথায় পাওয়া যাবে! কোথাও নেই বলেই রিয়াল মাদ্রিদ এখন দাবি করতে পারে, আমরাই বিশ্বের সেরা দল। রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ তো বলেই দিয়েছেন, ‘শিরোপাটা আমাদেরই প্রাপ্য ছিল। এটা জয় করার পর এবার বলতে পারি, আমরাই বিশ্বের সেরা দল।’ আর্জেন্টাইন ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ বধের যে মন্ত্র জপে মারাকেশ স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বরে খেলতে নেমেছিল ম্যাচ শেষে সেই মন্ত্র জপটাকে কেবলই ভাগাড়ম্বর বলে মনে হয়েছে। তীব্র গর্জনের পরও কোনো মেঘের দেখা নেই! বরং ম্যাচ শেষে স্যান লরেঞ্জোর কোচ এডগার্ডো মেনে নিলেন লস ব্ল্যাঙ্কোসদের শ্রেষ্ঠত্ব। তিনি বলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচটা যোগ্য হিসেবেই জিতেছে। তবে আমরাও হতাশ নই। বছরটা দারুণভাবেই শেষ হলো।’ রিয়াল মাদ্রিদ বিশেষ করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছ থেকে ভক্তরা যা আশা করছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি শনিবার গভীর রাতের ফাইনালে। বার্সেলোনার রূপ ধরা স্যান লরেঞ্জোকে ম্যাচের প্রথমার্ধে অনেকটা সংহতই মনে হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বন্ধ দোয়ার খুললেন সার্জিও রামোস। রিয়াল মাদ্রিদের এ স্প্যানিশ তারকা ৩৭ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয় গোলটা করেন ওয়েলসিয়ান তারকা গেরেথ বেলে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গোল শূন্যই থাকলেন। ক্লাব বিশ্বকাপে তার আর গোল করা হলো না রিয়ালের জার্সিতে! অবশ্য ম্যানইউর জার্সিতে ২০০৮ সালে তিনি একটা গোল করেছিলেন ক্লাব বিশ্বকাপে। সেবার শিরোপাও জয় করেছিলেন এ পর্তুগিজ তারকা।