সিআইএর (সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি) বন্দী নির্যাতনের প্রতিবেদন প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মার্কিন স্থাপনাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র সোমবার জানিয়েছেন, ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য স্থাপনাগুলোতে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।সিআইএর নির্যাতনের বিষয়ে সিনেটের ৪৮০ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদন মঙ্গলবার প্রকাশ করার কথা রয়েছে। সেখানে ৯/১১-র ঘটনার পর সিআইএর আল-কায়েদা বিরোধী প্রচারণার বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে সিআইএর জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। যাতে আটকদের ওপর সংস্থাটির সদস্যদের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা রয়েছে। প্রতিবেদনে ২০ জন বন্দীর সঙ্গে করা সিআইএর নির্যাতনের কথা জানানো হয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ২০০০ সালে বোমা হামলার ঘটনায় আটক জ্যেষ্ঠ আল-কায়েদা নেতা আবদেল রহমান আল নাসিরি। আরেক বন্দী হলেন ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা দলের সদস্য সন্দেহে আটক ফিলিস্তিনি আবু জুবায়দাহ। কোনো বিরতি ছাড়াই টানা পাঁচদিন তাকে একটুও ঘুমাতে না দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলতে থাকে। এ সময় তার ওপর নানা অত্যাচার চলে। প্রতিবেদনে আরও এক বন্দী বর্ণনা দিয়েছেন, কীভাবে সিআইএ কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তাকে যৌন নির্যাতন করার হুমকি দেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেন, এ ধরনের আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অমর্যাদাকর। ৯/১১-এর হামলার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবি্লউ বুশ আটক জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় এসব আচরণ করার অনুমতি দেন। বুশের অনুমোদনেই হোয়াইট হাউস ও সিআইএ বন্দীদের ওপর এসব অত্যাচার চালাত বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এদিকে প্রতিবেদনটি আরও আগে জনসম্মুখে প্রকাশের কথা থাকলেও ওয়াশিংটনের বিরোধিতায় তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ডেমোক্রেটদের উদ্যোগে সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির তৈরি ছয় হাজার পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি সংক্ষিপ্ত আকারে ৪৮০ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হচ্ছে। ৯/১১-র পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আমলে সন্দেহভাজন আল-কায়েদার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্বর অত্যাচার চালায় সিআইএ। ২০০৯ সালে বারাক ওবামা প্রথমবার ক্ষমতায় এলে এর মাত্রা কিছুটা কমে আসে। পরবর্তী সময়ে সমালোচনার মুখে সিআইএর এই বর্বরোচিত পদ্ধতির কথা স্বীকার করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। বিবিসি, এএফপি।