লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, বিএনপি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জনসমর্থিত রাজনৈতিক দল। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও ১৯টি রাজনৈতিক দল। আমাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য হতে পারে, কিন্তু বিএনপির শক্তিকে অবমূল্যায়ন করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
অলি আহমদ বলেন, বিগত এক বছর যাবত শুনে এসেছি, আন্দোলন করার শক্তি বিএনপির নেই। বিগত ৫ জানুয়ারি সমগ্র বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকার বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে তারা মিছিল করে প্রমাণ করে দিয়েছে তারা ছিল এবং আছে। সরকার যে মিথ্যা কথা বলেছে তা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে। দেশের মানুষ এবং ২০ দলীয় জোটকে সরকারই আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০ দলীয় ঐক্যজোট চেয়েছিল ঢাকার যে কোনো একটি জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশ করতে। কিন্তু সরকার ভীত হয়ে ১৪৪ ধারা জারি করে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সরকার বা বিরোধী দল কাউকেই মাঠে নামতে দেওয়া হবে না, পক্ষান্তরে সরকারের বিভিন্ন সংগঠন অস্ত্র ও লাঠিসোটা হাতে নিয়ে পুলিশের সহায়তায় সাধারণ মানুষসহ বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর টিয়ারশেল, গুলি ও লাঠিপেটা করেছে। এটি একদলীয় বর্বরতা, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কাজেকর্মে গণতন্ত্র লেশমাত্র নেই।
২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির এ নেতা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে তার গুলশান কার্যালয়ে বন্দি করা হয়নি। বরং তিনি নিজে ইচ্ছা করে অফিসে অবস্থান করছেন। সরকার মনে করছে দেশের মানুষ বোকা, কেউ কিছুই বোঝে না।
কর্নেল (অব.) অলি সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, খালেদা জিয়াকে যদি ভয় না করেন, তাহলে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য শত শত পুরুষ ও নারী পুলিশ সেখানে কেন অবস্থান আছে। কী কারণে ২৪টি বালুর ট্রাক এবং পিপার স্প্রে কী কারণে ব্যবহার করা হয়েছে। কেন কার্যালয়ের উভয় ফটকে বাইরে থেকে তালা মারা হয়েছে। বাংলাদেশে অতীতে কখনো এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটেনি। এমনকি আইয়ুব খান-ইয়াহিয়ার আমলেও এ ধরনের কোনো ঘটনা তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে করা হয়নি। জোর করে পুলিশ ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়, আশা করি সরকার এ সত্যটি উপলব্ধি করবে।
তিনি আরও বলেন, ২০ দলীয় জোটের নেত্রী বারবার দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। তার এই প্রস্তাব হলো গণতন্ত্রের ভাষা, দেশে শান্তি বজায় রাখার প্রয়াস এবং জনগণের ক্ষমতায়ন। কোনো অবস্থাতেই এটাকে দুর্বলতা হিসেবে ভাবা উচিত হবে না। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল সত্যিকারের গণতন্ত্র। স্বৈরতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্র নয়। আবেদন থাকবে যতদ্রুত সম্ভব দেশের স্বার্থে- উন্নয়নের স্বার্থে এবং জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য পন্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।অন্যথায় জনগণের মনে স্বস্তি ফিরে আসবে না এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঘরে বসে থাকবে না বলে সতর্ক করে এলডিপি সভাপতি।