প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগ রয়েছে, জনগণ রয়েছে, বিএনপির অযৌক্তিক আন্দোলন প্রতিহত করা হবে রাজপথেই।’
বিএনপির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ করবো? যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের সঙ্গে কিভাবে সংলাপ হবে?’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারপরও বিএনপি নেত্রীকে সংলাপের আহবান জানিয়ে অপমানিত হয়েছিলাম, আমাকে আর কতোবার অপমানিত হতে বলেন?’
লন্ডন সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার কিছু পরে গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার লন্ডন সফরে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অর্জনসহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। তবে প্রায় ৪০ মিনিট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তার সরকারের সাফল্যের বিভিন্ন দিক ছাড়াও ভবিষ্যক দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য উঠে আসে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন এমন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। ফলে অনেক আসনেই একতরফা ভোট হয়েছে, আন্তর্জাতিক ফোরামে কথা বলতে গেলেই এ প্রসঙ্গ এসে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি দেশ চালাতে ব্যর্থ হতাম, তাহলে সংলাপ বা নির্বাচনের প্রশ্ন আসতো। দেশের জনগণ শান্তিতে আছে, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি করতে বিএনপি আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তাই শান্তি নষ্ট করতে সংলাপ-নির্বাচন চায় তারা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, এদেশেই এ বিচার শেষ হবে। যেমনিভাবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, ঠিক সেভাবেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে রায় কার্যকর করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়েই তো ক্ষমতায় আসবে। আপনারা কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান, নাকি যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় দেখতে চান?’
সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে পুরোপুরি বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। সুখী সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াতের সঙ্গে তার দলের ও সরকারের আঁতাতের গুজবকেও নাকচ করে দেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের জন্য কাজ করে। আঁতাতের রাজনীতি করে না। জামায়াতের কাছ থেকে আওয়ামী লীগের কী পাওয়ার আছে? যাদের হাতে বিএনপি দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলো, যুদ্ধপরাধের জন্য তাদের আমরা গ্রেফতার করতে পেরেছি। কয়েকজনের শাস্তি হয়েছে। বিচার করলে আমিই পারবো। আমার হারাবার কিছু নেই।’