ক্ষমতায় থাকার অনড় সিদ্ধান্তের কারনে ইরাকের সংকট ক্রমে জটিল হয়ে উঠছে। সোমবার বাগদাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মালিকির অনুগত ইরাকি স্পেশাল ফোর্সকে মোতায়েন করা হয়েছে। পেন্টাগন বলছে ক্ষমতা নিয়ে যে কোন মুহুর্তে বাগদাদে সামরিক অভ্যুত্থানের আশংকা দেখা দিয়েছে।সর্বদলীয় সরকার গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদের দাবি ছাড়তে নারাজ নূরে আল মালিকি। এদিকে পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার হায়দার আল আবাদিকে সরকার গঠনের আহবান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ আল মাসুম। সোমবার ইরাকের কোয়ালিশন শিয়া সম্প্রদায়ের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য আবাদিকে প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন করা হয়। খবর আল জাজিরার। সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মাসুদ বলেন, দেশ এখন আবাদির হাতে। তবে আবাদি সরকার গঠনের আগে নুরই আল মালিকি ৩০ সরকার পরিচালনার সময় পাবেন। ইরাকি প্রেসিডেন্ট এর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ। তবে মালিকি এ প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে সমস্যা সমাধানে ফেডারেল আদালতে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন।এদিকে ইরাকের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ফৌদ মাসুমের আবেদন অগ্রাহ্য করে মালিকি তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদের দাবি জানাবেন বলে স্থির করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় ইরাকের কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী মালিকি ফের ওই পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।এক দিকে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জঙ্গিদের উত্তরে অভিযান, অন্য দিকে মালিকির অবস্থান দুইয়ে মিলে ইরাকের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।এপ্রিলে সাধারণ নির্বাচনে মালিকির শিয়া দল সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে সরকার গঠনের জন্য অন্য দলের সাহায্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু গত দশ বছর ধরে চলা মালিকি-সরকারের বিদ্বেষমূলক নীতির কারণে কোনো সুন্নি বা কুর্দি রাজনৈতিক দল তাকে সর্মথন করতে রাজি হয়নি।অনেকের মতে মালিকির শিয়া ঘেঁষা নীতির কারনেই আজ আইএস জঙ্গিদের এত বাড়াবাড়ি। ফলে সরকার গঠন করতে পারেননি মালিকি। কয়েকবার ইরাকি পার্লামেন্টের অধিবেশন বসলেও ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কুর্দি সমর্থিত সদস্যরা অধিবেশন বর্জন করে চলে যাওয়ায় সংকট আরো তীব্র হয়েছে।সম্প্রতি তারা উত্তর দিকে কুর্দিশাসিত অঞ্চলের দিকে অভিযান শুরু করেছে। এই অবস্থায় আইএস-কে মোকাবিলার জন্য সর্বদল সরকারের দাবি ওঠে। কিন্তু মালিকি তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন। এদিকে সোমবার প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়ে মালিকি উচ্চ আদালতের বাধা পেরিয়েছেন।প্রেসিডেন্টের আবেদনে মালিকি অনড় থাকায় তার প্রবল সমালোচনা করেছে আমেরিকা। মালিকির ঘোষণার সঙ্গে বাগদাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গার দখল নেয় ইরাকি স্পেশ্যাল ফোর্স। বাগাদাদের গ্রিন জোন-এর প্রবেশ পথে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়।
এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে আরবিলের মার্কিন কনস্যুলেট থেকে বেশ কিছু কর্মী সরিয়ে নিচ্ছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট।