আকাশ ইকবাল
দেশে ধর্ষণের মহোৎসব শুরু হয়েছে মনে হয়। ইচ্ছে হয় এই এই দেশ ছেড়ে দূরে কোথাও ছলে যাই। থাকতে ইচ্ছে হয় না, বাঁচতে ইচ্ছে হয় না এমন একটা নোংরা দেশে। এই দিকে সরকার দেশে গণতন্ত্রের সুবতাস বয়, দেশ উন্নয়নের জ্বলে ভেসে যায়। দেশ নারীদের কে তার পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। সরকার বার বার বলছে একমাত্র এই সরকার আমলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সরকার আমলে নারী তার পূর্ণ অধিকার পেয়েছে। কিন্তু কোথায় তার অধিকার? এই দেখছি ধর্ষকদের তার নারী ধর্ষনের পূর্ণ অধিকার । যদি না পেতো তাহলে তাদের অন্যায়ের প্রতিরোধ করছে না কেন? বিচার করছে না কেন? আমি কিভাবে বলব আমার বাংলাদেশ তার নারীদের অধিকার দিয়েছে। গত কিছু মাস আগে ইরান সরকার একটি নির্দোষ মেয়েকে ফাঁসি দিয়ে দেয়। এদিকে মেয়েটির উপর নির্যাতন কারী বেঁছে যায়। আমি কি বলবোনা বাংলাদেশ আজ ইরান থেকে ও কম নয় । মানবাধিকার সংগঠনের হিসাব ও গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, চলতি বছর প্রথম চার মাসে ১৫৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর আগের বাকি বছর গুলোতো বাতিই দিলাম। এর মধ্যে ৬১ জন নারী আর ৪৩ জন শিশু । চলতি বছরে গণ ধর্ষনের শিকার ৭৬ জনের মধ্যে ৩৯ শিশু। এর মধ্যে চলতি বছরে একটা পশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এবার আপনারা বলেন দেশে কি সত্যই গণতন্ত্রের সুবতাস বয়?????? নারী তার অধিকার নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারছে? আবার একটি মহল বলছে ধর্ষণের জন্য অশালীন পোশাকই দায়ী। অশালীন পোশাক ! যখন এ কথা বলে তখন অবাক হই! বাংলাদেশ এটা আমেরিকা নয়। কি আর অশালীন পোশাক পরে তারা। যে ধর্ষকরা তাদের নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারেনা। যাক কিছুক্ষনের জন্য মেনে নিলাম অশালীন পোশাকই দায়ী । তার আগে আপনাদের অবগত করছিযে বেশি নয় গত এক সপ্তাহের পত্রিকা গুলোর দিকে খেয়াল করলে আপনারা বুঝতে পারবেন। আমি আগেও বলেছি চলতি বছরের চার মাসে ৪৩ শিশুর মধ্যে তারা প্রায় সবাই ৫ম শ্রেনীর মধ্যে । তারা কী অশালীন পোশাক পরে রাস্তায় আর বিদ্যালয়ে যায়। যে কারণে ধর্ষকরা তাদের জোর করে হোক আইচক্রিম বা চকলেটের কথা বলে বুলিয়ে বালিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছে মত ধর্ষণ করে। নিজের শেষ হলে তার বন্ধু কে ডাকে। কেন?? আমি মানলাম ওই শিশুদের ও পোশাক অশালীন তাই তাদের ধর্ষিতা হতে হয়। গত কিছু দিন আগে চট্টগ্রামে যে একটা গরু ধর্ষণ হলো সেই গরু ও কি অশালীন পোশাক পড়ে মাঠে গাস খাচ্ছিলো? ভুল হয়েছে মস্ত বড় ভুল হয়েছে গরু কেও পোশাক পরিদান করে মাঠে গাস খাওয়ার জন্য আনতে হবে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে জন্মের কিছুক্ষন পর থেকে শালীন পোশাক পোরাতে হবে না হয় কে বা করা এসে তাকে ও ধর্ষণ করে যায় ঠিক নাই। যে ধর্ষক সে তার নিজেকে কন্টোল করতে পারেনি। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললে দুইটা তিনটা করে ধর্ষণের ঘটনা দেখতে পাই।
সর্বশেষ গত ২০ মার্চ রাতের ঘটনা। যা নিয়ে এতি মধ্যে পুরো বাংলাদেশ তা ফেসবুক ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে স্ট্যাটাস দিয়ে। মেয়েটির কি দোষ ছিল। প্রতিদিন একই সময়ে টিউশন করার জন্য একই পথ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি যেতো। সেই দিনও গিয়ে হয়ত হলে ফিরছিল। কই মেয়েটি তো খারাব কোনো অশালীন পোশাক পরিদান করেনি। হ্যাঁ আপনারা এটা বলতে পারেন। অশালীন পোশাক নয় রাতে কেন হল থেকে বে হয়েছে। মেয়েরা তো রাতে ঘরের ভেতরে থাকার কথা। বাইরে বের হয়েছ তো ছেলেরা কি করবে। একা পেয়েছে ধর্ষণ করেছে। এই কথা গুলো আমাদের সমাজের অনেক মানুষ বলে। বিশেষ করে জামাতি মার্কা মানুষ বেশি বলে। মেয়েটি পারিবারিক বোঝা না হয়ে নিজেই টিউশন করে নিজের ব্যক্তিগত খরচ ও পড়ালেখার ব্যয় বহন করে। সেই জন্য সে প্রতিদিন রাতে ছাত্রদের টিউশন করার জন্য বের হয়।
আমাদের দেশের সরকার তো এই সব শিক্ষার্থীদের ব্যয় বহন করবেও না আবার নিরাপত্তাও দিবে না। কারণ সে গরীব ঘরের সন্তান।
বর্তামান দেশের যে অবস্থা। এখানে একটি মূলনীতি হয়ে দাঁড়িছে টাকা যার শিক্ষা তার। আজ সরকার যদি এই মেয়েটির পড়ালেখার ব্যয় বার গ্রহণ করতো হয়ত সে রাতে বের হতো না। আর ধর্ষিতও হতে হতো না।
সরকার ব্যয় গ্রহণ করলে কি মেয়েরা রাতে বের হতে পারবে না এটা কোন যুক্তি না। ছেলেদের যদি রাতে বের হওয়া অধিকার হয় মেয়েদেরও সেই অধিকার দিতে হবে।