শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

পদত্যাগপত্র গ্রহণ করুন নইলে কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত মানব না

image_70329.mamata

 

ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভি সি সম্পদ কে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তুমুল আলোচনার জন্মদিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তৃণমূল সুপ্রিমোর হুমকি, নয় আমার পদত্যাগপত্র নিতে হবে। নইলে আমি আপনাদের কোনো কথা মানব না। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে মমতা বলেন, কংগ্রেস, বিজেপি ও বামফ্রন্টের কথা শুনছেন আপনারা। কংগ্রেস কে জেতাতে নেমেছেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কে দেখবে? আমরা না কেন্দ্র। আমি কারো কথা শুনব না। যাদের সরানো হলো একজনকেও আমি সরাব না। সাহস থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুক কমিশন। শুধু তাই নয়, একজন উপমুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নাম করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে বলেও অভিযোগ তোলেন মমতা।
আনন্দবাজার পত্রিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন মমতা। বলেন, আনন্দবাজার পত্রিকা আর কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে যড়যন্ত্র করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিল করব জনগণকে নিয়ে। আমি ভয়পাই না। ৩৫ বছর নির্বাচন কমিশন আমাকে দেখেনি। আমি কারো কথা শুনব না।
সোমবার কলকাতা লাগোয়া হুগলি জেলার পান্ডুয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন মমতা।
এ দিন সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্যের পাঁচ জেলার এসপি এবং জেলাশাসককে সরিয়ে নতুন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। আর এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কে সামলাবে। রাজ্য না কেন্দ্র। কোনো কিছু হয়ে গেলে আমি দায়ি থাকব না। যাদের সরানো হলো তাদের আবার আনা হবে। হুগলি পান্ডুয়ায় নির্বাচনী সভায় দাঁড়িয়ে উপ-মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুৎসির নাম করে মমতা বলেন, কী করে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। জুৎসির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরয়োনা আছে। সেটা দেখা হবে না কেন।
রবিবার দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশন ভি এস সম্পদ নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করেন। সেখানেই কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম দল গুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন জেলার শাসক এবং পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠে। প্রধান কমিশনার দিল্লি ফিরে গিয়েই সোমবার সন্ধ্যায় বর্ধমান, মালদা, পশ্চিম মেদেনিপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ আর ঝাড়গ্রাম জেলার এসপি বদল হয়েছে। আর উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা শাসক সঞ্জয় বনশালকেও ক্লোস করে সেখানে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একজন অতিরিক্ত জেলাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মমতার এই হুশিয়ারি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যনির্বাচনী কর্মকর্তা সুনীল গুপ্তা জানান, নির্বাচনী আইন মেনে যারা করার কমিশন করেছে। কারো যদি এই ইস্যুতে বলার থাকে তবে সেটা আইনিপন্থায় বলতে হবে।
মতার এই হুমকি নিয়ে সরব অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারাও। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এই ইস্যুতে মমতাকে অসহিষ্ণু বলে মন্তব্য করেন। রাজ্যের পরিবর্তনের ফলে এই অবস্থার তৈরি হয়েছে বলে বিমান বসু জানান।
নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, আগে যখন তৃণমূল নেত্রী বিরোধী দল নেতা ছিলেন তখন এই ধরনের বদল কে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তবে এখন সরকারে এসে তিনি ফুসছেন কেন। তবে কি আতে ঘা লাগল তৃণমূলের। আসলে মমতা বুঝে গেছেন প্রশাসনকে ব্যবহার করেই জোর করে ভোট দিতে হবে এইবার। নইলে তাঁর দলের পক্ষে জয় পাওয়া অনিশ্চিত।
নির্বাচন নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পরই দেশের পুরো আইনশৃঙ্খলা এবং প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধিনে চলে যায়। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশ পাওয়ার পরই রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবরা তৎপরতা শুরু করেন। তাঁরা আসলে কোন পথে হাঁটবেন সেটিও বুঝে উঠতে পারছেন না।