রাজিব মজুমদার ॥ মহাসড়ক ও রেললাইনে চলমান নাশকতা ঠেকাতে মীরসরাই ও সীতাকুন্ড অংশে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে আনসার- গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি) এর সদস্যরা। এছাড়াও আনসার-ভিডিপির সদস্যরা হরতাল, অবরোধ, পূজা, ধর্মীয় উৎসব, নির্বাচন, রেল নিরাপত্তা, সড়ক নিরাপত্তা, নিয়মিত টহলের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য আটক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করলেও তাঁদের এই কৃতিত্বের যথার্থ মিডিয়ায় প্রচার নেই। আবার জাতীয় বিভিন্ন নির্বাচে ও আনসার সদস্যদের ভূমিকা পরিলক্ষিত হয় ব্যাপকভাবে। কিন্তু নানাভাবে ওরা অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে সরকার, দেশ ও সমাজের কাছে।
জানা গেছে, চলমান নাশকতা রোধকল্পে মীরসরাই এবং সীতাকুন্ড উপজেলায় মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহ মোট ২৬টি পয়েন্টে ৭৮ জন প্লাটুন কমান্ডার, ২৩৪ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য সহ মোট ৩১২ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। রেলপথে ৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে ২৮০ জন আনসার-ভিডিপির সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালনকালে গত ১৭ ফেব্র“য়ারি মীরসরাইয়ের ওয়াহেদপুর এলাকায় রেললাইনে মোঃ আবু বক্কর (৫০) ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালনকালে আনসার-ভিডিপির সদস্যরা আহত হয়েছে।
২৯ আনসার ব্যাটালিয়ন জোরারগঞ্জ কোম্পানী কমান্ডার মোহাম্মদ টিটুল মিয়া ও কোয়াটার মাষ্টার মোঃ রোমান জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং নাশকতা রোধকল্পে রেল লাইন ও মহাসড়কে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতনভাবে স্থানীয়দের সহযোগীতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করছি। সশ্রস্ত্র আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যসহ আনসার-ভিডিপি’র সদস্যরা লাঠি বাঁশি নিয়ে প্রতি দুই কিলোমিটার মহাসড়ক ও রেলপথে ৮জন সদস্য ৪ শিফটে রাতদিন নিরবিচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তাঁদের এই শ্রম ও ত্যাগের কোনো প্রচার নেই।
২৯ আনসার ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক মোঃ সেলিমুজ্জামান জানান, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে অবিরাম ছুটে চলেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা। এছাড়া চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন থানা, রামু, পেকুয়া থানায় অপারেশান কাজে পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন, টেকনাফ, নয়াপাড়া, রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে অস্ত্র উদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলায় রক্ষার কাজ করছে দক্ষ আনসার ব্যাটালিয়ন, সাধারণ আনসার, অঙ্গিভূত আনসার সদস্যরা। ঝুঁকি নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করলেও মিডিয়ায় কোনো প্রচার নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারী গঠিত হওয়া বাহিনীটি আনসার ব্যাটালিয়ান আনসার বাহিনী আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ৩ নং আইন ) অনুযায়ী এ বাহিনীর দায়িত্ব হলো – জননিরাপত্তামূলক কাজে সরকার বা সরকারের অধীন কোন কর্তৃপক্ষকে সহায়তা প্রদান এবং অন্য কোন নিরাপত্তামূলক কাজে অংশগ্রহণ করা; দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত কোন জনকল্যাণমূলক কাজে অংশ গ্রহণ করা এবং সরকারের নির্দেশে স্থল বাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলস্, পুলিশ বাহিনী, ব্যাটালিয়ান আনসার বাহিনীকে সাহায্য করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সাহায্যে কাজ করা, দেশের আইন শৃংখলা রক্ষার্থে সরকারী আইন শৃংখলা বাহিনীকে সাহায্য করা, স্বেচ্ছাসেবার কাজসহ সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা।