Thursday, January 16Welcome khabarica24 Online

থানায় মামলা, আসামি ৯ ।। সিনিয়র-জুনিয়র মনোমালিন্যে জোড়া খুন

gfgfg

এদিকে পুলিশ গতকাল পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি বলে জানালেও এজাহার ভুক্ত আসামি জাহাঙ্গীর প্রকাশ ছোটনকে লাশ উত্তোলনের দিনই কৌশলে আটক করে। কিন্তু এই সংবাদ গতকাল পর্যন্ত অফিসিয়ালি স্বীকার করেনি পুলিশ। তবে পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে জাহাঙ্গীরই তুরুপের তাস হয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পাশাপাশি এর নেপথ্যের কারিগরদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দিয়েছে। সেই জানিয়েছে, ফোরকান ও কামরুলকে যখন প্রথম আঘাত করা হয়, তখন তাদের নড়ার মতো শক্তি ছিল না। খুব সহজেই তাদের হাত পিছ মোড়া করে বেঁধে ফেলা হয়। সে দাবি করে , তাদের যে খুন করা হবে এ বিষয়টি সে জানতো না। সে ভেবেছিল আগে যেমন বিভিন্ন জনকে এনে বেধড়ক পিটিয়ে ছেড়ে দেয়া হতো, এদেরও তাই করা হবে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তার ভুল ভাঙে। সে কিছু বলতে চাইলে তারও একই পরিণতি হতে পারে ভেবে চুপ ছিল সে।চট্টগ্রামে জোড়া খুনের (ফোরকান ও কামরুল) ঘটনায় খুলশী থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত কামরুল ইসলামের পিতা আব্দুল হাকিম বাদি হয়ে ৯ জনকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় গত সোমবার গভীর রাতে একটি খুনের মামলা (নং ১৪) দায়ের করেন। এজাহারভুক্ত নয় আসামি হলো জাহাঙ্গীর প্রকাশ ছোটন, বাচা, শাহেদ, শাহ আলম, আকাশ, জীবন, লেদু, ভুট্টো ও বাহার। এদের মধ্যে বাচা গত শনিবার রাতে কামরুল ও ফোরকানকে ডেকে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই তাদের সাথে পরিবারের আর যোগাযোগ ছিল না। অন্যদিকে খুলশী থানার এস আই রাসেল বাদি হয়ে লাশ উদ্ধারকালে ষোলশহর দু’নম্বর গেইট এলাকায় যানবাহন ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ ও পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধাদানের ঘটনায় প্রায় দেড়শ জনকে আসামি করে একটি ভাঙচুরের মামলা করেছেন। খুলশী থানার ওসি মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি। পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মামলার আসামিদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় এজাহারে উল্লেখ করা হয় নি। তাদের অপরাধের ধরণটি তুলে ধরা হয়েছে।নগরীতে দুই বন্ধুর এই হত্যা ঘটনা যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। অস্ত্র হিসেবে বড় কিছু নয়, ব্যবহৃত হয়েছে ধারালো ব্লেড। ব্লেড দিয়েই হত্যাকারীরা এ পৈশাচিক কাণ্ডটি ঘটিয়েছে। সুস্থ মস্তিষ্কে এ ধরনের কিছু করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাই হত্যার আগে ফোরকান ও কামরুলকে যেমন কৌশলে অত্যধিক মাদক সেবন করানো হয়, তেমনি খুনিরাও মাদক সেবন করেছিল। সিএমপির উপকমিশনার (গোয়েন্দা) কুসুম দেওয়ান আজাদীকে বলেন, কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নয়, স্রেফ সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব ও লেনদেন সংক্রান্ত মনোমালিন্যের কারণে লোমহর্ষক এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে।

প্রসঙ্গত: নগরীর খুলশী থানাধীন ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকা থেকে গত ১৭ মার্চ ফোরকান ও কামরুলের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ দুটি বড় কবরস্থান সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়। নিহত দুজনই এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি ওয়াসিম গ্রুপের কর্মী বলে তাদের বন্ধুরা জানিয়েছেন। ফোরকান সিইপিজেডে একটি কারখানার শ্রমিক। সে নাসিরাবাদ এলাকায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক ছাত্র। অন্যদিকে কামরুল এমইএস কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

চট্টগ্রামে দুই বন্ধুকে (ছবি) খুনের পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে গুম করার মামলায় এজাহারভূক্ত দুই জনসহ চার আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) খুলশি থানার এসআই মো. রাসেল মিয়া বলেন, এদের  মধ্যে দুই জনকে মঙ্গলবার রাতে নগরীর খুলশি এলাকা থেকে অপর দুইজনকে বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি থেকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর (২০) ও শাহ আলম (১৯) এজাহার নামীয় আসামি, তারা দুই জনেই নিহত মো. ফোরকান ও কামরুল হাসানের বন্ধু। বাকি দুই জনকে সন্দেহভাজন হিসাবে আটক করা হয়। নগর ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (উত্তর) মো. কামরুজ্জামান বলেন, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গত রোববার সকালে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকার একটি নির্মাণাধীন বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে ওই দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের দুই জনকে কুপিয়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার পর লাশ ট্যাংকিতে রাখা হয়। পরে খুনিদের একজন ফোরকানের মাকে ফোনে খুনের খবর জানিয়ে ট্যাংক থেকে লাশ নিয়ে যেতে বলে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ নিশ্চিত মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। – See more at: http://www.dailyinqilab.com/2014/03/19/167676.php#sthash.Zs4PzC1D.dpuf