দুদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটায় একটি বিশেষ চার্টার বিমানে ঢাকার উদ্দেশে দিল্লী ছাড়েন তিনি।হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নরেন্দ্র মোদীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাকে স্বশস্ত্র ও লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়। বিমান বন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনার সঙ্গে মোদীকে দেয়া হয় গান স্যালুট। তাকে দেয়া হয় গার্ড অফ অনার। দুই প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সালাম নেন ও গার্ড পরিদর্শন করেন।এরপর বিমানবন্দরে উপস্থিত বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ, তিন বাহিনীর প্রধানসহ কর্মকর্তা এবং ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন নরেন্দ্র মোদী।এদিকে বাংলাদেশ সফরে আসা নিয়ে শনিবার সকালে টুইটারে টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটারে মোদী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে যাচ্ছি। এই সফর দুই জাতির মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় করবে, আমাদের দুই দেশ ও অঞ্চলের জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই মোদীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। ভারতের ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর হাইপ্রোফাইল সফর গোটা এশিয়ায় প্রভাব ফেলেছে।বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে রওনা দেন মোদী। সেখানে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক।সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১১টা ২৬ মিনিটে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি এক মিনিট নীরবতা পালন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও মন্তব্য খাতায় অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ সময় সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি বৃক্ষরোপণ করেন।এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে নরেন্দ্র মোদী ১১টা ৪০ মিনিটে সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধ থেকে ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের উদ্দেশে রওনা দেন। ১২টা ১০ মিনিটে সেখানে পৌছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে দুপুরে নরেন্দ্র মোদি তারকা খচিত অভিজাত আবাসিক হোটেল সোনারগাঁও উঠেছেন। সেখানে তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন।এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে হোটেল সোনারগাঁওয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ১৫ মিনিটের সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে শীর্ষ বৈঠকে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।ছিটমহল বিনিময়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিলও হস্তান্তর হবে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। এই সফরে তিস্তা চুক্তি যে হচ্ছে না, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিত থাকতে একদিন আগেই ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।শীর্ষ বৈঠকের পর রাতে সোনারগাঁও হোটেলে ফিরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।সফরের দ্বিতীয় দিন রোববারও ব্যস্ত সময় কাটাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন শেষে বারিধারায় ভারতীয় হাই কমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মোদী। সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অটল বিহারি বাজপাইর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্মাননা গ্রহণ করবেন বিজেপির এই নেতা।এরপর হোটেলে ফিরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সাক্ষাৎ দেবেন মোদী।রাতে ঢাকা ছাড়ার আগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভারতীয় হাই কমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন মোদী।