ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীর বিপণিবিতান, বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত সদস্যের সঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার অতিরিক্ত সদস্য যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার পুলিশ, ২ হাজার র্যাব এবং ২ হাজার গোয়েন্দা সদস্য। এদিকে, গত ২২ জুলাই থেকে নদীপথ, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটে ১০০ নৌ-পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি এবার বড় অঙ্কের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রেও পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজধানীতে ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়েছে। ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, রাজধানীর ৪৯টি পুলিশ স্টেশনে অপরাধ কর্মকাণ্ড কমিয়ে আনার ব্যাপারে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের যাতে কোনো রকমের হয়রানির মধ্যে পড়তে না হয় সেজন্য রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনালে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিপণিবিতান এবং মার্কেটগুলোয় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) বসানো হয়েছে। এছাড়াও জরুরি পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রাজধানীর বড় বড় বিপণিবিতানে মনিটরিং টিম মোতায়েন করা হয়েছে। ঈদের নামাজে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় ঈদগাহে ডগ স্কোয়াড থাকবে।গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের অপরাধ দমনে আমরা ইতিমধ্যে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। মানুষের ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোটরসাইকেলে করে সাদা পোশাকে পুলিশ টহল দিচ্ছে। রাজধানীর অপরাধপ্রবণ এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৮টি জোনের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। ঈদ শেষ হওয়ার আগে ও পরে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে।এদিকে, ঈদে নৌ-যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই প্রথমবারের মতো নদীপথ, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটে নৌ- পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশে নৌ-পুলিশ ইউনিট চালু হওয়ার পর তাদের এ ঈদে আনুষ্ঠানিকভাবে মোতায়েন করা হলো। প্রাথমিকভাবে নৌ-পুলিশের ১০০ জন সদস্য মাঠপর্যায়ে এই নিরাপত্তা দেবে।পুলিশ সদর দফতরের নৌ-পুলিশ ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর ও রাজবাড়ী এলাকার নদী পথ, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটে নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকার সদরঘাটে একজন এসআই পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৩০ জন, আরিচা ফেরিঘাটে ২০ জন, মাওয়া ফেরিঘাটে ২০ জন, কাওড়াকান্দিতে ১৫ জন ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ১৫ জন নৌ-পুলিশের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।এ ব্যাপারে নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোখলেসুর রহমান জানান, গত ২২ জুলাই থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নৌপথে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা আরও সুরক্ষিত করার লক্ষ্যেই তাদের এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
উৎস- বাংলাদেশ-প্রতিদিন