ঝিনাইদহের বারোবাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় বরযাত্রীবাহী বাসের অন্তত ১১ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৮ জন । আহতদের ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ ও যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর-কনে বাহী প্রাইভেটকারটি দুর্ঘটনার সামান্য আগেই রেলক্রসিং পার হওয়ায় তারা প্রানে বেঁচে যায়।নিহতরা হলো শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের বিমল বিশ্বাস (৩০ ) সুধির (৩৫) সুজয় (৩০) বিপ্লব (৩০) স্বপ্না সাহা (৩০) সুভন (৩০) অলক (৩০) কৌসিক (৮) পান্না সাহা (১৬) ও ফরিদপুর জেলার কানাইপুর গ্রামের উজ্জ্বল বিশ্বাস (৩০)।শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর খুলনার সাথে শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। অতপর উদ্ধার অভিযান শেষ হলে দুর্ঘটনার আট ঘন্টা পর খুলনা-রাজশাহী রেল পথে ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়।ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন বর যাত্রীবাহী একটি বাস কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার রেলক্রসিং এর ওপর ওঠামাত্র খুলনাগামী সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেসের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে বাসটি চুর্ণবিচুর্ণ হয়ে ট্রনের ইঞ্জিনের সামনের অংশে ঢুকে পড়ে। বাস যাত্রীরা রাস্তার দুই পাশে ছিটকে পড়েন এবং অনেকেই ট্রেনের নীচে চাপা পড়েন।তিনি আরো জানান, ট্রেনটি বাসটিকে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১০০ গজ দূরে নিয়ে যায়। এরপর ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে পড়ে। পালিয়ে যান ট্রেনের চালক।সংশ্লিষ্ট কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতেই আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে স্থানীয় দমকল বাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার কাজে অংশ নেন। তারা ভোরের আলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা ৯টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন । ফরিদপুর নেয়ার পথে একজনের এবং ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: অপূর্ব সুত্রে জানা গেছে । এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ১১জনে।আহতদের মধ্যে যশোর হাসপাতালে ৩০জন, কালীগঞ্জ হাসপাতালে ৩জন এবং ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ১৩জন মুমুর্ষ অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তি একজনের হাত শরীর থেকে বিছিন্ন হয়ে গেছে। তাকে জরুরী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ।জীবিতরা জানান, শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের লোক তারা। সাকো মোছনপুর গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানের পর বাসে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসটিতে বর কনেসহ ৭০জন যাত্রী ছিলেন । এ ঘটনায় বর ও কনের ভাগ্যে ভাল । একটি সুত্র জানায়, তারা আগেই প্রাইভেটকারে চড়ে রেলক্রসিং পার হয়েছিলেন।ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো : শফিকুল ইসলামসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন । খুলনা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে েেপৗছানোর পরে উদ্ধার কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে খুলনার সাথে সারা দেশের সব ধরনের রেল যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে । ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার জন্য রেল ক্রসিংয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত গার্ডকে প্রাথমিক ভাবে দায়ি করা হচ্ছে ।