নিজস্ব প্রতিনিধি :: মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিন সোনাপাহাড় গ্রামের রিক্সা চালক রশিদুলের মা হামিদা বানু ( ৫০) সোমবার ( ৩০ মার্চ) দুপুরে ডাল আর আলু ভর্তা দিয়েছে খেয়েছে । রাতের চাল আর নেই। কারন ছেলে রশিদুল ( ৩২) তিন দিন ধরে রিক্সা চালাতে পারছে না করোনার ভয়ে। রাতে খেতে পারবে না তাই ঘরে থাকা মুরি, সরিষার তেল মেখে খেয়ে, সাথে বেশী করে পানি খেয়ে সন্ধ্যার পরই শুয়ে গেছে। নাতি নাতিনকে ও নানা ভুতের ঘল্প শোনাচ্ছিল। কিন্তু দুশ্চিন্তা কাল সকালে কি খাওয়াবে ছোট্ট নাতি, নাতিনকে, নিজে আগে কখনো ভিক্ষা ও করতো। এখন তো তা ও পারবে না মহামারি করোনার ভয়ে। ভাবছিল সকাল কারো কাছে যেতেই হবে যে করে হোক ভিক্ষে বা ধার যাই হোক । রাত তখন ৮টা পার হয়েছে মাত্র। এমন সময় এক যুবক ডাক দিলো -হামিদা …চাচি, আছো ঘরে ? কে ? জানতে চাইলে যুবক বললো করিম মাষ্টার আসছে, চাল ডাল তেল, পিয়াজ, আলু, সবজি নিয়ে। উঠো।
উঠে দরজা খুলতেই হামিদার চোখ গড়িয়ে অশ্রু। এই বিপদের দিনে করিম মাষ্টারের কথাই মনে হচ্ছিল বার বার হামিদা বানুর । সকালেই আপনার বাড়ি যাবো ভাবছিলাম কিছু চাইতে, এমনটিই বলে কেঁদে জড়িয়ে ধরলেন করিম মাষ্টারকে। এসময় করিম মাষ্টার বললেন আমার বাড়ি যেতে হবে না। যতোদিন আপনার ছেলে কাজে যেতে পারবে না ততোদিন আমি বাড়িতে পৌছে দিবো খাবার। তবু ও সবাই ভালো থাকুন, ঘরে থাকুন। ঠিক এভাবে এক হাজার দুঃস্থ ও বেকার হয়ে যাওয়া কর্মজীবি মানুষের ঘরে ঘরে রাতে ও দিনে গত দুই দিন ধরে খাবার পৌছে দিচ্ছেন জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব রেজাউল করিম মাষ্টার । ঠিক যেভাবে হামিদা বানুর ঘরে দিয়ে এসেছেন, একইভাবে সকল অসহায়ের তালিকা নিজেই তৈরী করেছেন তিনি। এই বিষয়ে করিম মাষ্টারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বললেন আমার প্রিয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে আমি এই সেবামূলক কাজ করছি। তিনি আরো বলেন আমার এই মানবিক সহযোগিতা আমার ব্যক্তিগত ও মকবুল আহমেদ ফাউন্ডেশান এর পক্ষ থেকে করছি। তিনি বলেন আমার ইউনিয়নে কোন মানুষ না খেয়ে আছে তার খবর যে কেউ আমার কাছে পৌছালেই আমি নিজে গিয়ে তার ঘরে খাবার পৌছে দিবো। ঠিক এমন মানবিক উদাহরন উপজেলার অনেক গ্রাম ও ইউনিয়নেই দৃশ্যমান বলে জানা গেছে। কেউ প্রচার করছেন অপরকে উৎসাহিত করতে, কেউ প্রচারই করছেন না। করিম মাষ্টার ও প্রচার করতে চাইছিলেন না। কিন্তু হামিদা বানুদের এমন গল্প জানলে নিজের বাড়ির পাশের অনেক হামিদা বানুর গল্প অনুসন্ধান করবেন অনেকে। মানবতার হাত অনেকে প্রসারিত করতে এগিয়ে আসবেন নিজ নিজ এলাকায়। তাই করিম মাষ্টারের এই ছবি গোপনে তাঁর নিকটস্থ মানুষ থেকে সংগ্রহ করে, নিজেই অনুসন্ধান করলাম এক হামিদা বানুর সত্যিকারের গল্প।