অবশেষে জামিন পেলেন নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তথা নূর হোসেনের অন্যতম সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম। শুক্রবার বিকেলে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। গত ৩ ডিসেম্বর শর্তসাপেক্ষে (চার হাজার রুপির ব্যক্তিগত বন্ড এবং দুইজন জামিনদার) তার জামিন মঞ্জুর করে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা দায়রা আদালত। শুক্রবার আদালতের তরফে তার জামিন মঞ্জুরের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছলে বিকেলেই কারামুক্ত হন সেলিম। এদিন তাকে কারাগার থেকে নিতে আসেন নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের সদস্য মুনির হোসেন।কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সেলিম জানান, তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সেলিমের যুক্তি ‘নুর হোসেন আমাদের ব্যবসায়িক সঙ্গী। কলকাতায় তার আসার খবর পেয়েই আমরাও বৈধ কাগজপত্র নিয়েই ভারতে প্রবেশ করি এবং তার সঙ্গে দেখা করি। নূর হোসেনের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি থাকায় সে পুলিশের চোখে অপরাধী ছিল। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই ছিল না। যেহেতু আমরা চেয়ারম্যান (নূর হোসেন)-এর সঙ্গে ছিলাম সেই কারণেই পুলিশ আমাদের ওই কাগজপত্র সিজড করে’।পুলিশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ এনে সেলিম বলেন ‘যেহেতু আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছিল না তাই পুলিশ চক্রান্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্ট ধারা প্রয়োগ করে’। সেলিম আরও জানান ‘নূর হোসেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ফেরত যেতে চান না। দেশের পরিস্থিতি বুঝে চেয়ারম্যান দেশে ফেরার জন্য পরবর্তীতে আইনি পদক্ষেপ নেবেন’।অন্যদিকে সেলিমের আইনজীবী তন্ময় প্রামাণিক বলেন ‘আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ যে চার্জশিট দিয়েছে তা মিথ্যা। আমি আমার মক্কেলের কাগজপত্র জোগাড় করে তা আদালতে পেশ করি। এরপর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে’।উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার সহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি নূর হোসেন এবং তার দুই সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান সেলিম এবং খান সুমনকে গত ১৪ জুন কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধ অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৪ বিদেশি নাগরিক আইন (ফরেনারস অ্যাক্ট) লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ইতোমধ্যে এই মামলায় আরেক অভিযুক্ত খান সুমনেরও জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সেও এখন কারাগার থেকে মুক্ত। তবে জামিন না হওয়ায় কেন্দ্রীয় কারাগারেই বন্দি আছেন নূর হোসেন।