সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন। আগামী বছরের প্রথম দিকেই হতে যাচ্ছে বহু আকাঙ্ক্ষিত এ স্থানীয় সরকার নির্বাচন। সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানুয়ারি মাসের মধ্যেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে, সীমানা নির্ধারণসহ বিদ্যমান কিছু জটিলতার সমাধান ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসেই এ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) প্রশাসকদের মেয়াদ ৬ মাস (১৮০ দিন) থেকে বাড়িয়ে এক বছর (৩৬৫ দিন) করার প্রস্তাব করে বৈঠকে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৪ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হয়।এদিকে খসড়া আইনটি ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ অধ্যাদেশটি উপস্থাপন করে। তবে মন্ত্রিসভা মনে করেছে, আরও গভীরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন যখন চাইবে তখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০১৪ ফিরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রিসভা ফেরত পাঠিয়েছে। তবে, বিলটি দ্বিতীয়বার আর মন্ত্রিসভায় না যাওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসকদের দিয়ে স্থানীয় সরকারের এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল নির্বাচনের পর ২০০৭ সালের ১৪ মে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময় দুই দফায় ডিসিসি নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সম্ভব হয়নি। ফলে ঢাকার নির্বাচিত মেয়র বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা তার মেয়াদ চালিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলেও নানা কারণে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর মহাজোট সরকার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান করে ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ৫৬টি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নামে দুই ভাগ করা হয় ডিসিসিকে। ডিসিসি দুই ভাগ করার পর সাদেক হোসেন খোকা তার পদ হারান। কিন্তু ছয় মাসের সেই নির্বাচনের আদেশ শেষ হয়ে তিন বছর পার হলেও এখনও প্রশাসকের হাতেই রয়েছে দুই করপোরেশনের তত্ত্বাবধান, সীমানা জটিলতার মামলার অজুহাতে কোনো নির্বাচন ছাড়াই চলছে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম।