বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিনের হুঙ্কার

mohiuddin20130809050332_2402_40392

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কেউ রাজনীতি করলে পরিণাম ভাল হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। বলেছেন, সাইফ পাওয়ারটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান বন্দরে কিভাবে কাজ করছে তা আমার বোধগম্য নয়। আমি জানি, তারা অবৈধভাবে সেখানে আছে। চুক্তিভঙ্গ করে তারা বন্দরকে জিম্মি করে রেখেছে। ওদেরকে শেল্টার দিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। তারা নতুনভাবে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান, বর্তমান নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী। এই সময় তিনি আরও হুঙ্কার দিয়ে বলেন, বন্দর অচলের কাজে যদি কেউ সাইফ পাওয়ারটেককে প্রশ্রয় দেয় তাহলে আমরা শ্রমিকদের নিয়ে তাদের প্রতিহত করবো। কিছুতেই দেশের স্বর্ণদার বন্দরকে কুক্ষিগত হতে দেবো না। এই নিয়ে কোন ধরনের রাজনীতি চলবে না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান বন্দরের অনেক টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতে বন্দরের সঙ্গে জড়িত সব লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা একটি মাফিয়া। আমি এই মাফিয়াদের হাত থেকে চট্টগ্রামের মানুষকে বাঁচাতে আন্দোলন শুরু করেছি।’ মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সাইফ পাওয়ারটেক কোন ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই বন্দরের কাজ পেয়ে গেছে। ২০০৭ সালে ওরা এনসিটি পরিচালনার কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। অথচ তাদের স্টিভিডোরিং ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের কোন ধরনের অভিজ্ঞতা নেই। আমি দুর্নীতি কমিশনের কাছে অনুরোধ জানাবো তারা যেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় দ্রুত।’ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। এই সময় এক সাংবাদিক তার হঠাৎ করে আন্দোলনে যাওয়ার প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি ফেয়ার রাজনীতি করি। অন্যায়কে কখনোই প্রশ্রয় দেই না। বন্দরে কোন ধরনের অন্যায় কাজ চলবে তা আমি হতে দেবো না।’ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে বিভিন্ন ছোট বড় সংগঠনের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে সাইফ পাওয়ারটেক নামের ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিভিন্ন জনসভায় তিনি দাবি করে জানান, গত আট বছর ধরে একচেটিয়া চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং কাজ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে হাতে রেখে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। বন্দর সম্পর্কিত বিধিমালাকে উপেক্ষা করে কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে তারা প্রতিবছর গড়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার বিল আদায় করছে। ডিপিএম পদ্ধতিতে এ পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে ৮৫ কোটি টাকারও বেশি। বন্দরে সাইফ পাওয়ার টেককে বারবার ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) ভিত্তিতে কাজ দেয়ার ঘটনা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। রহস্য উদঘাটনে সরকারের উঁচু মহল, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও দুদকের কাছে শিগগিরই তিনি চিঠি দেবেন বলে এক বিবৃতি জানিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের বিপক্ষে পত্রিকায় একাধিকবার বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে দেখা গেছে সাইফ পাওয়ারটেক কর্তৃপক্ষকে।