বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

গণভোটের অপেক্ষায় প্রমাদ গুনছে স্কটল্যান্ড

image_129924.scottish-independence1

নতুন ইতিহাস রচনার পথে স্কটল্যান্ড। বুধবার রাতেই রচিত হয়ে যাবে স্কটল্যান্ডের ভাগ্য। কারণ সব ক্ষমতা এখন জনগনের হাতে। স্বাধীনতার পক্ষে যদি রায় দেন স্কচেরা, তাহলে ৩০০ বছরের অধীনতা থেকে মুক্তি পাবে স্কটল্যান্ড৷ বর্তমানে ইংল্যান্ডের অঙ্গরাজ্য হিসেবেই তার পরিচিতি।

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে তরজা বহুদিন ধরেই চলছে। বুধবার শেষ পর্যায়ের মতো ভোটারদের মন জয় করতে মাঠে নেমে পড়ল দু’পক্ষই। স্বাধীনতাপন্থীরা ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, ইতিবাচক ভোট প্রদান করলে স্কটল্যান্ডের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়বে বলে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ অন্যদিকে স্বাধীনতা বিরোধী প্রচারে বলা হচ্ছে, ভোট না দিলেই বরং স্কটল্যান্ড আরও বেশী স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পাবে৷ লেবার পার্টির সদস্য ডগলাস আলেকজান্ডার স্পষ্ট করে বলেছেন, ভোট না দিলে স্কটল্যান্ডে শীঘ্রই পরিবর্তন আসবে৷ যদি স্বাধীনতার পক্ষে মত দেওয়া হয় তবে বাড়বে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা।

ব্রিটেনের মূল তিনটি দলের নেতা ডেভিড ক্যামেরন, এড মিলিব্যান্ড এবং নিক ক্লেগ তিনজনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে স্কটিশরা স্বাধীনতা প্রত্যাখ্যান করলে তারা স্কটল্যান্ডের কাছে আরও ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। আবেগাপ্লুত এক ভাষণে ক্যামেরন স্কটদেরকে যুক্তরাজ্য ছেড়ে না যাবার আবেদন জানান। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভাঙ্গন হলে সেটি হবে বেদনাদায়ক বিচ্ছেদের মতো। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার এলেক্স স্যামন্ড বলেছেন, স্বাধীন হলে স্কটিশ অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে বলে। তিনি বলেন, শেষ মুহুর্তের এই সব প্রতিশ্রুতি বিশেষ কাজ করবে না। স্কটিশরা নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যত গড়বেন। স্কটল্যান্ডের ডেপুটি ফার্স্ট মিনিস্টারনিকোলা স্টারজিয়ন ওই তিন নেতার আন্তরিকতা ও ঘোষনার সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এতদিন পরে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা মনে পড়ল? ক্যামেরনরা স্কটল্যাণ্ডের ভোটারদের অপমান করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ২০১২ সালে যখন জনমত নেওয়ার কথা হয়, তখন ওই তিন নেতাই স্কটল্যাণ্ডের বাড়তি ক্ষমতা দেওয়ার ব্যাপারে বিরোধিতা করেন।

প্রসঙ্গত, ১৬০৩ সালে রাজা প্রথম জ্যাকবের অধীনে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের রাজবংশ একত্রিত হয়। ১৭০৭ সালে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের আইনসভাও এক হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্কটল্যান্ড নিজস্ব বিচারব্যবস্থা, নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা, এমনকি নিজস্ব টাকাও রয়েছে তাদের। ১৯৯৯ সাল থেকে স্কটল্যান্ডের নিজস্ব আইনসভা তৈরী হয় এবং তখন থেকেই দেশটি স্বায়ত্বশাসিত। ইংল্যান্ডের রাণী ও প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষমতা থাকলেও, ফার্স্ট মিনিস্টারই স্কটল্যান্ডে সর্বেসর্বা। শুধুই স্কটল্যান্ড নয়, সারা বিশ্ব তাকিয়ে আগামীকালের দিকে। নতুন দেশের মর্যাদা, না কি স্বায়ত্বশাসনেই সীমাবদ্ধ থাকল স্কচেরা, সেদিকেই তাকিয়ে আপামর বিশ্ববাসী।