অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে চলমান একাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম অঘটন ঘটিয়েছে আয়ারল্যান্ড। কিংবদন্তী ক্রিকেটার ব্রায়ান লারা ও ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিউজিল্যান্ডের সেক্সটন ওভালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ‘বি’ গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে ৪ উইকেটে হারিয়েছে আইরিশরা। পল স্টারলিং, এড জয়সি ও নিয়াল ও’ ব্রেইনের চমৎকার ব্যাটিংয়ে ২৫ বল বাকি হাতে রেখেই এ জয় পায় দেশটি। স্টারলিংয়ের ৮৪ বলে ৯২ রান, জয়সির ৬৭ বলে ৮৪ রান ও নিয়াল ও’ ব্রেইনের ৬০ বলে অপরাজিত ৭৯ রানের উপর ভর করে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এ জয় তুলে নেয় আইরিশরা। ক্যারিবীয়দের হয়ে জেরোমি টেইলর সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট, গেইল ও মারলন স্যামুয়েলস ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। খবর ক্রিকোইনফোরজয়ের জন্য ৩০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে খেলতে নেমে শুরু থেকেই বেশ মারমুখী ছিল আয়ারল্যান্ড। ওপেনার পোর্টারফিল্ড ৪৩ বলে ব্যক্তিগত ২৩ রানে অাউট হয়ে ফিরে গেলেও পুরো ইনিংসজুড়েই মারমুৃখী ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন স্টারলিং ও জয়সি। আর দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন নিয়াল ও’ ব্রেইন।এর আগে টসে হেরে প্রথম ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এক পর্যায়ে তাদের স্কোর ছিল ৮৭/৫। অথচ এ অবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেছিলেন ড্যারেন সামি ও লেন্ডন সিমনস। তাদের রেকর্ড ষষ্ঠ উইকেট পার্টনারশিপের উপর ভর করে ক্যারিবীয়রা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৪ রান সংগ্রহ করেছিল। ২১.১ ওভারে সামি ও সিমনস জুটি ১৫৪ রান সংগ্রহ করে। সিমনস ৮৪ বলে ১০২ রান করেন। এটা হচ্ছে তার একদিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সিমনসের ইনিংসে ৫টি ছক্কা ও ৯টি চারের মার ছিল। আর সামি ৬৭ বলে ৮৯ রান করেন। শুধু তাই নয়, শেষ ১০ ওভারে ১২৪ রান তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা। আর শেষ ১৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ১৬৭ রান।ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ক্রিস গেইল ও ডোয়াইন স্মিথ ধীরগতিতে হলেও ভালোই খেলছিলেন। তবে যারা বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে ব্যর্থ ছিলেন। ২৪ বলে ব্যক্তিগত ১৮ রানে কেবিন ও’ ব্রেইনের বলে অাউট হয়ে যান স্মিথ। স্মিথের আউটের পর মাঠে নামেন ড্যারেন ব্রাভো। ২ বল খেলে কোনো রান না করেই রানঅাউট হয়ে যান ব্রাভো। এরপর মারলন স্যামুয়েলস ক্রিজে আসেন। তিনিও বেশি সময় মাঠে থাকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২১ রানে ডকরেলের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরে যান স্যামুয়েলস। এরপর দিনেশ রামদিন মাঠে নেমে মাত্র ৬ বল মোকাবেলা করেই আউট হয়ে যান। ডকরেলের বলে এলবিডাব্লিউ হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ছিল মাত্র ১ রান! ফলে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর ফলে ক্রিস গেইলও তার সহজাত খেলা খেলতে ব্যর্থ হন। ৬৫ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়ে যান গেইলও। গেইলের রান ও বলের অনুপাত দেখলেই তিনি যে স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেননি তার প্রমাণ মেলে। গেইলের আউট হয়ে গেলে ক্যারিবীয়রা আসলেই বিপর্যয়ে পড়ে। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সামিকে নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে দলকে বিপর্যয় থেকে তুলে আনেন সিমনস। বলা যায়, নবাগত আয়ারল্যান্ডের কাছে দলের লজ্জাজনক হার বাঁচিয়েছেন এ দু’জন। দলের ইনিংসকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩০৪ রান করেই ক্ষান্ত দেন তারা। তবে তাদের এ রেকর্ড পার্টনারশিপও শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার ঠেকাতে পারল না। আয়ারল্যান্ডের হয়ে ডকরেল তার ১০ ওভারের স্পেলে ৫০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন। আর ব্রেইন, সরেনসেন ও মোনি ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।