এক বছর আগে ঠিক এমনই এক ফেব্রুয়ারি দিনে দিল্লির মসনদ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আগামী ১৪ তারিখ সেই বিদায়ের বর্ষপূর্তি। তার ঠিক চার দিন আগে দিল্লির মানুষ টিম-কেজরিওয়ালের হাতেই তুলে দিলেন দিল্লির শাসনভার। শুধু তাই নয়, গত বার বাইরে থেকে যে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে কেজরিওয়ালকে সরকার গঠন করতে হয়েছিল, এবার সেই দলকে দিল্লি থেকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন তারা। অজয় মাকেনের নেতৃত্বে রাজধানীর নির্বাচনে কংগ্রেস একটি আসনও পায়নি। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মাকেন।আশ্চর্যের আরও বাকি ছিল। মোদি-অমিতের নির্দেশনায় যে বিজেপি গত মে মাস থেকে একের পর এক নির্বাচনে কেবল জয়ের মুখই দেখেছে, সেই দলকে এ দিন দু’অঙ্কের সংখ্যাও ছুঁতে দেননি দিল্লির মানুষ! সকাল থেকেই বিজেপি প্রার্থীরা প্রায় প্রত্যেকটি আসনে পিছিয়ে ছিলেন আপ-এর কাছে। বেলা যত বেড়েছে, ততই দীর্ঘ হয়েছে দু’ দলের ব্যবধান। দুপুরের দিকে স্পষ্ট হয়ে যায়, মাত্র তিন আসনেই বিজেপিকে বেঁধে ফেলেছে দিল্লি। তার বাইরে আর বেরোতে পারেনি নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের নির্বাচনী কলাকৌশল।এবারের নির্বাচনের আগ থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল লড়াইটা হবে আম আদমি পার্টি ও ভারতীয় জনতা পার্টির মধ্যে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যাচ্ছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি যেখানে ৬৭টি আসন পেয়েছে, সেখানে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহর বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৩টি আসন। হেরেছেন দলের মূখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কিরণ বেদিও। আপ এর এসকে বাগগার কাছে ২ হাজার ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হন। অন্যদিকে কংগ্রেসকে কোন আসনে জয়ের মুখই দেখতে দেয়নি দিল্লির মানুষ।
এদিকে, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিল্লির স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। শুরু থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে আপ-এর এগিয়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উল্লাসে মেতে ওঠেন আপ-এর কর্মী-সমর্থকরা। দিল্লিতে কেজরিওয়ালের বাসার সামনেও বহু সমর্থক উৎসবে মেতে ওঠেন। বাজি পোড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই আবির খেলা এবং মিষ্টি মুখ শুরু হয়ে যায় তাদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিধানসভা নির্বাচনে ৭০ টি আসনের মধ্যে ৩১ টি আসন পায় বিজেপি। ২৮ টি আসনে জিতে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আম আদমি পার্টি, কংগ্রেসের সংগ্রহে ছিল মাত্র ৮ টি আসন। অন্যান্য ৩টি।