নিজস্ব প্রতিনিধি :: সঠিক প্রমান ও যথাযথ বাদী না থাকায় মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় অনেক হত্যাকান্ডই অপমৃত্যু হিসেবে প্রকৃত রহস্য আড়ালে ধামাচাপা পড়ে যাবার অভিযোগ উঠেছে। আর একইভাবে করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের কুলসুমা আক্তার মুন্নী হত্যার ঘটনা তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন অপমৃত্যু বলে ধামাচাপা দিতে চাইছে বলে অভিযোগ মুন্নীর পরিবারের। এদিকে মামলার এজাহারভুক্ত অভিযুক্তরা ও বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে বলে সরেজমিনে জানা গেছে। তবে পুলিশ রহস্যজনকভাবে এই বিষয়ে কোন মন্থব্য করছেন না।
গতকাল শুক্রবার ( ১০ এপ্রিল ) পর্যন্ত মুন্নী হত্যার অভিযোগের তদন্তে অগ্রগতি হতাশাজনক বলে গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে দাবী করে মামলার বাদী বড় ভাই ফিরোজ আহমদ। ৯ এপ্রিল জোরারগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্তে আসার পূর্বেই অপরাধিরা সকলে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে বলে জানান তিনি। একজন মহিলা ছাড়া সবাই গা ঢাকা দিয়েছে । ছোট জা যিনি অনেক অপরাধ নীরবে দেখেছেন তিনিই বাড়িতে আছেন এখন। তিনি বলেন স্বামীকে নানান কথা বলে কান ভারি করা বিষয়ে শাশুড়ি এবং বড় জা এর সাথে নানা বিষয়ে ভালোমন্দ তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে চেঁচামেচির সৃষ্টি হলে ঝগড়ার এক পর্যায়ে শাশুড়ী ও বড় জা ই বালিশ চাপা দিলে সেখানেই আমার বোন মৃত্যবরণ করে। আর তখন আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য তার মৃতদেহ ফ্যানের সাথে নিজেরা ঝুলিয়ে দেয়। যার সাক্ষি সেই ঘরেই রয়েছে। তিনি আরো বলেন গত ৫ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যায় স্বামীর সাথে ১ ঘন্টা নানা বিষয়ে কথা বললে স্বামী ও অনেক তথ্য জানিয়েছিল আমার বোনকে। তবে স্বামীর প্রশ্রয় ও প্ররোচনা রয়েছে আমার বোনকে খুন করার পেছনে। আমার বোনের ঘরের মধ্যে কোন চেয়ার বা টুল না থাকা স্বত্বে ও খাটের উপর ফ্যানের অধিক দূরত্ব নেই এমন স্থানে ফ্যানের একটি ডানায় ভর করে গৃহবধুর আত্মহতা সাজানো ঘটনায় বেরিয়ে আসছে অনেক তথ্যই। গৃহবধু মুন্নীর মামা স্বাস্থ্যকর্মী নুরুল আলম অশ্রুসিক্ত নয়নে জানায় আদরের একমাত্র ভাগনির ঘরের এক স্কুল পড়–য়া কিশোর নাতি নুর উদ্দিন ( ১২) ও বলেছিল ‘আমি দেখেছি মুন্নী মামি যখন ফ্যানের ঝুলছিল তখন উনার হাটু খাটে ভাজ করা। ঘরের দরজার কোন হুক ভাঙ্গা ছিল না, পরে ভাঙ্গা হয়েছে পুলিশকে দেখানোর জন্য। এদিকে মুন্নীর এমন খবর পেয়ে পার্শ্বেই বাবার বাড়িতে খবর দেয়নি শ্বশুরের পরিবার। আগে পুলিশকে খবর দিয়েছে। পরিবারের লোকজন যখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে তখন দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ অমিত দে মুন্নীকে মৃত ঘোষনা করেন। আর এই বিষয়ে অমিত এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মুন্নীর গলায় একটি ঝুলে থাকার দাগ ছিল, তবে তা অতোটা গভীর দাগ নয়। তিনি এই দাগে নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না এটি আত্মহত্যা। প্রকৃত ঘটনা পোষ্টমর্টেম রিপোর্টেই প্রমানিত হবে বলে তিনি জানান। এই বিষয়ে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার এসআই নিবাস কুমার ভট্রাচার্য বলেন আমি গত ৯ এপিল ঘটনার তদন্তে গিয়েছিলাম। অভিযোগকারীগনের নানা আলামত সংগ্রহ করেছি, পোষ্ট মর্টেম রির্পোর্ট আসার বিষয়ে অপেক্ষা করছি। এজাহারে অভিযুক্ত আসামীরা নাকি পালিয়ে গেছে আপনি তা জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ঘরে একজন মহিলা পেয়েছি, তার সাথে কথা বলেছি। তাহলে করোনার আতংকের এই মুহুর্তে ঘরের অবশিষ্ট সদস্যরা কোথায় খোঁজ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে ও মন্থব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে এই বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি মফিজ উদ্দিন ভূঞা পিপিএম বলেন মুন্নীর পরিবারের সকল অভিযোগ অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেখা হবে, এই বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ন্যায় বিচারের সকল সহযোগিতা করা হবে বলে ও জানান তিনি।