বিনোদন ডেক্স: ওবায়দুল হক সাগর। একজন তরুণ সফল অভিনেতা। অল্পদিনেই যিনি দর্শকদের মন জয় করে নিয়ে জনপ্রিয় অভিনেতার কাতারে নাম লিখিয়েছেন। কিছু কিছু মানুষের প্রতিভা লুকিয়ে থাকে, যা সময়ে এবং শুযুগের কারণে তা জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়না। কিন্তু যখন প্রকাশ পায়, তখন খুব অল্প সময়েই সে হয়ে উঠে জনগণের আস্থা, ভালোবাসার ও প্রিয় মানুষ। আর তেমনি একজন প্রতিভাবান অভিনেতা ওবায়দুল হক সাগর। যিনি ছোট বেলা থেকেই অভিনয়ের স্বপ্ন মনের মধ্যে পালন করে আসছেন এবং ছোট বেলা থেকেই মাঝে মধ্যে অভিনয় করতেন। আর তাই যখন প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ আসলো ঠিক তখনি তিনি বুঝিয়ে দিলেন তার প্রতিভার বিকাশ। তাই তিনি ইতো মধ্যেই শেষ করেছেন বেশ কিছু মিউজিক ভিডিও, নাটক, টেলিফিল্ম, মঞ্চ নাটক যা নিজ এলাকাসহ সারাদেশেই বেশ সারা জাগিয়েছেন। ওবায়দুল হক সাগর চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় ১৯৮৮ সালে পশ্চিম ইসলামাবাদ গ্রামে নানার বাড়িতে এক স¤্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোঃ আব্দুল মালেক ও মাতা আলেয়া বেগমের দুই পুত্র, এক কন্যার মধ্যে ওবায়দুল হক সাগর বড় ছেলে। জীবিকার তাগিদে বর্তমানে চট্টগ্রামের খুলশী থানাধীন ঝাউতলা টিপিপি কলোনী এলাকায় বসবাস করলেও গ্রামে জন্ম হওয়ায় নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। নিজ এলাকা উত্তর ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লেখা-পড়া শুরু করে এরপর শহরে চলে আসার কারণে শহরের স্কুলেই ভর্তি হতে হয়। নিউ ঝাউতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণী পাশ করেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি এবং পাহাড়তলী ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি শেষ করে বর্তমানে ওমর গণি এম.ই.এস বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রী অধ্যায়নরত অবস্থা আছেন। ছোট বেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল প্রচন্ড। তাই তো ছাত্র জীবনে থেকেই অভিনয়ের সাথে জড়িত ছিলেন। তবে অনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি ক্যামেরার সামনে আসেন ২০০৮ সনে। তিনি তার বাবা-মা, ভাই-বোন নিয়ে সুখেই আছেন। ওবায়দুল হক সাগর সম্পর্তি মানবজীবনকে একটি সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। যা পাঠকের জন্য এখানে তা উপস্থাপন করা হলো ঃ
সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন ঃ মোঃ ফারুক হোসেন।
মানবজীবন ঃ এতো পেশা থাকতে আপনি অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিলেন কেন ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ অভিনয় আমার খুবই ভালো লাগে। কারণ হলো একটি সমাজ বা রাষ্ট্রর পরিচয় ফুটে উঠে একটি রাষ্ট্রের কৃষ্টি, কালচার ও সংস্কৃতি থেকে। আর এ কালচার, সংস্কৃতিটি চলচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেন একজন অভিনেতা। আর একজন ভালো অভিনেতা খুবই সহজেই সমাজ, রাষ্ট্র বা বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তাই আমি অভিনয়কে নেশা এবং পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি।
মানবজীব ঃ আপনি কবে থেকে অভিনয় করছেন ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ আমি ছোট বেলা থেকেই মঞ্চ নাটক, পথ নাটক ও ষ্ট্রেজে অভিনয় করেছি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার প্রথম ক্যামেরার সামনের আসা হয় ২০০৮ সনে। এ.বি রনির রচনা ও পরিচালনায় নাটক ‘ত্রাস দম’ এর অভিনয়ের মাধ্যমে বলতে পারেন এখান থেকেই আমার আনুষ্ঠানিক অভিনয়ে যাত্রা শুরু।
মানবজীবন ঃ আপনার প্রথম যাত্রা মানে প্রথম অভিনয়ের কিছু স্মৃতি বলরেন কি ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ প্রথম ক্যামেরার সামনে দাড়াতে একটু কেমন ভয় ভয় লাগছিলো। পরিচালক আমাকে খুব সাহস দিচ্ছিল। তবুও মনে একটু ভয় ভয় হচ্ছিল, মনে হয় ঘেমে যাচ্ছি। সামান্য কয়েকটি শব্দ বলতেই মনে হলো অনেক কিছু বলে ফেলেছি। তবে এখন আর তেমন মনে হয় না। এখন অনেক কিছু বললেও মনে হয় খুবই কম বলেছি, সামান্য বলেছি। হা হা হা হা হা হা
মানবজীবন ঃ অভিনয়ের সাথে সম্পৃক্ত হবার পর এ পর্যন্ত কয়টি নাটক ও সিনেমায় অভিনয় করেছেন ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ টেলিফিল্ম ৮টি, নাটক ৪টি, ছবি ১টি, মিউজিক ভিডিওতে ৫টি গানের মডেলিং করেছি। মঞ্চ নাটক হয়েছে ৬টি এবং ১টি বিজ্ঞাপন ও ১টি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছি। টেলিফিল্ম ঃ ত্রাস দমন, কেন ভালোবাসলাম, আই লাভ ইউ, জামাই বউয়ের ক্যাইজ্যা, অতৃপ্ত ভালোবাসা, লাশারা বিল্লাল, এইতো জীবন ও নিলীমার নীল। নাটক ঃ ছন্দবেশ, প্রাণের সঞ্চারণ, বালির ঘর, ভালোবাসার পরিনতী ও শেষ পরিনতী। পূর্ণদৈঘ্য বাংলা ছায়াছবি ঃ বকুলের ভালোবাসা। মিউজিক ভিডিও ঃ তুই জীবন তুই মরণ, নিউতী, ওরেও বাঁশি ওয়ালা, ওরে জীবনে কোনদিন ও কি যাদু করিলা। মঞ্চ নাটক ঃ ক্ষাতির বিড়াম্বনা, আশ্রম পিড়া, স্বপ্নের বাংলাদেশ, একুশের ইতিবৃত্ত, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও অস্পশ্য এবং শিক্ষা মূলক বিনোদন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ঃ ধান্দা যা এবারের ঈদে বাংলাদেশ টেলিভিশনে আসছে ইত্যাদি।
মানবজীব ঃ কোন বিষয়টি আপনাকে অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহিত করেছে ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ ছোট বেলা থেকেই আমার অভিনয়ে প্রতি আগ্রহ ছিল, শখ ও বলতে পারেন। তার কারন অভিনেতারা সহজ সরল ও উদার মনের হয়ে থাকেন। এ জন্য আমার অভিনয়ে প্রতি বেশ আগ্রহ। আর অভিনয়টাকে আমার এক ধরনের সেবা বলে মনে হয়। আর মানুষের সেবার মাধ্যমে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি আছে। তাই আমি অভিনয় সেবার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। তাছাড়া অভিনয়ের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতিকে জনগণের এবং বর্হিবিশ্বের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায়। সব চেয়ে সহজ। তাই সেবার জন্যই অভিনয়কে বেছে নিয়েছি।
মানবজীবন ঃ সামনে ঈদ, আর এ ঈদে আপনার ভক্তদের জন্য নতুন কিছু করতেছেন কি ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ হ্যাঁ, করতেছি। এ বারের ঈদ উপলক্ষ্যে ভক্তদের জন্য “রাইডিং বিনোদন চট্টগ্রাম” ঈদ ফ্যাশন/পূজার নামে চট্টগ্রাম ১ম ও ২য় সংখ্যা নামে একটি ম্যাগাজিন বই বাজারে আসবে। তৈরী করেছি নাটক প্রাণের সঞ্চারণ, বালির ঘর, টেলিফিল্ম এইতো জীবন এবং পাঁচটি মিউজিক ভিডিও গান দর্শকদের দেখার জন্য আমন্ত্রণ রহিল। আশা করি দর্শকদের ভালো লাগবে।
মানবজীবন ঃ আপনি একজন অভিনেতা হিসেবে সংস্কৃতি বা অভিনয়টাকে কি ভাবে মূল্যায়ন করেন ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ আমি সংস্কৃতিক বা অভিনয় কে খুবই সম্মান করি। আর অভিনয়টা কে অন্তর থেকে ভালোবাসি তাই তো অভিনয়টাকে আপন করে নিয়েছি। যার মনে সংস্কৃতির প্রেম নেই সে কখনো প্রকৃত অভিনেতা হতে পারে না। আর একজন ভালো অভিনেতার মধ্যে সব ধরণের গুনাবলি খুঁজে পাওয়া যায়।
মানবজঝীবন ঃ কার উৎসাহ ও অনুপ্রেণায় আপনি অভিনয় জগতে এসেছেন ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ আমি মূলত অভিনয়ে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার পরিবার থেকে। এর পর দর্শকদের ভালো লাগা আমার অনুপ্রেণাকে আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। দর্শকদের ও ভালোবাসা অব্যহত থাকলে আমি ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু দর্শকদের উপহার দিতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।
মানবজীবন ঃ আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে, সংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িয়ে থাকা। অভিনয়ের সাথে সারাটা জীবন জড়িয়ে থাকা এবং এমন কিছু করে যেতে চাই যাতে মৃত্যুর পরেও দর্শকদের মনের মাঝে বেঁচে থাকতে পারি।
মানবজীবন ঃ দর্শকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি ?
ওবায়দুল হক সাগর ঃ দর্শকদের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলতে চাই। যদি আমার অভিনয় আপনারদের ভালোলাগে তাহলে আপনার আমাকে উৎসাহ দেবেন। আর আপনাদের উৎসাহ পেলে আমি আরো ভালোকিছু করতে পারবো। আমি আজীবন বেঁচে থাকতে চাই আপনাদের হৃদয়ের মাঝে।
মানবজীবন ঃ আমাদেরকে আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ওবায়দুল হক সাগর ঃ আপনাকেও ধন্যবাদ। সাথে মানবজীবন পত্রিকার পরিবারসহ আমার ভক্তদের জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা।