শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ঈদের পর সরকার পতন আন্দোলন

khaleda-new-sm20131120031033_13326

ঈদের পর সরকার পতন আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রবিবার বিকেলে জয়পুরহাটে বিষ্টিবিঘ্নিত জনসভায় তিনি বলেন, ‘ঈদের পর জোরেসোরে আন্দোলনে নামব। এই অবৈধ ও জুলুমবাজ সরকারকে সরাতেই হবে।’

বিএনপি চেয়ারপার্সন নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আমি আছি। আমার কোনো ভয় নেই। এই স্বৈরাচার ও দুর্নীতিবাজ সরকারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে যতদিন দরকার ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।’

তিনি এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘গডফাদারের মা’ হিসেবে সম্বোধন করে বলেন, ‘গডফাদারের মা যতদিন জোর করে ক্ষমতায় থাকবে ততদিন বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন হবে না। আজ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পার্থক্য বুঝতে হবে।’

তিনি শামীম ওসমান, নিজাম হাজারীর মতো ব্যক্তিদের সমর্থন দেওয়ায় শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই অবৈধ সরকার জনগণকে ভোট দিতে দেয়নি। তাই নতুন নির্বাচন দিতে হবে। এই সরকার অবৈধ, কারণ জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। বিএনপি জনগণের প্রতিনিধি কারণ বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা বলছে, সংলাপে বসতে হবে। কারণ আমরা দেশের সর্ববৃহৎ দল। কাজেই আমাদের সঙ্গে কথা বলতেই হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট দিতে হবে।’

‘নতুন নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগ ভয় পায়’ উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা জানে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের করুণ পরিণতি বরণ করে নিতে হবে। তারা বিএনপিকে ভয় পায়।’

বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের অধীন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, হবেও না। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় আমরা এগিয়েছিলাম। কিন্তু তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দফায় তারা কারচুপি শুরু করে। তারা বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের অধীন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না।’

‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজ সরকার’ উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জনগণের টাকা আত্মসাৎ করছে। পদ্মা সেতুর টাকা চুরি করেছে, কুইক রেন্টাল, শেয়ার মার্কেট থেকে টাকা চুরি করেছে। আর সেই চুরি করা টাকা দেশের বাইরে পাঠিয়েছে, সুইস ব্যাংকে জমা রেখেছে।’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কঠোর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা চোখ বন্ধ করে রেখেছে। তারা একচোখা। আওয়ামী লীগের লোকেরা দুর্নীতি করছে, টাকা পাচার করছে। আর তারা চোখ বন্ধ করে রেখেছে। বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা করছে।’

খালেদা জিয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনে জয়পুরহাটের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘জয়পুরহাটের মানুষকে আমি সালাম জানাব। কারণ তারা আমার ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ১২ জন শহীদসহ বহু লোক আহত হয়েছিল। ‘দুর্যোগপূর্ণ এই আবহাওয়ায় আপনারা এখানে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদের দেখে আমার সাহস আরও বেড়ে গেছে। আমি সবসময় আপনাদের সঙ্গে আছি।’

এর আগে, প্রচণ্ড বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শহরের সরকারি বাজলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভার মঞ্চে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন।

বগুড়া সার্কিট হাউস থেকে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে খালেদা জিয়া জয়পুরহাটের উদ্দেশে রওনা দেন। বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি জয়পুরহাট শহরের সরকারি বাজলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছান।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলীর সভাপতিত্বে স্থানীয় নেতারা এ সময় বক্তব্য রাখেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।