ইরাকের লড়াইয়ে আরও জড়িয়ে পড়ল আমেরিকা। ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস) জঙ্গিদের দমনে এ বার ইরাকে সেনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন প্রশাসন। আজ শনিবার মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা ইরাকে আরো এক হাজার ৫০০ সেনা পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেন। তবে এই সেনা আইএস এর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামবে না। প্রধানত ইরাকি সেনাকে প্রশিক্ষণ দিতে এবং তাদের যুদ্ধের পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে এই সেনা।
সম্প্রতি আমেরিকায় অন্তর্বর্তী নির্বাচন হয়েছে। মার্কিন আইনসভার উচ্চকক্ষ সেনেটে ও নিম্নকক্ষ কংগ্রেসে এখন রিপাবলিকান দল সংখ্যাগরিষ্ঠ। বেশ কিছু দিন ধরেই রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ইরাক ও সিরিয়া নীতির সমালোচনা করে আসছেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, আইএস দমনে যথেষ্ট সক্রিয় নয় ওবামা প্রশাসন। শুধু বিমান হামলায় আইএস দমন সম্ভব নয় বলে তাদের মত। রিপাবলিকানদের এক অংশের দাবি ছিল, ইরাকে অবিলম্বে স্থলসেনা নামানো হোক। মার্কিন সেনার জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ এর চেয়ারম্যান জেনারেল মার্টিন ডেম্পসি এর মধ্যেই ইরাকে স্থল সেনা ব্যবহারের আভাস দিয়েছেন।মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন সেনাদের দুই ভাগে ভাগ করা হবে। একটি ভাগ বাগদাদের খুব কাছে থাকবে। অন্য ভাগ থাকবে কুর্দদের নিয়ন্ত্রণাধীন আরবিল-এ। এঁরা প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধের ছক তৈরির জন্য দু’টি কেন্দ্রও তৈরি করবেন। ঠিক হয়েছে, ইরাকি সেনার ন’টি ব্রিগেড এবং কুর্দ পেশমেরগাদের তিনটি ব্রিগেডের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব এই সেনাদের দেওয়া হবে। বাগাদাদের নতুন সরকার সুন্নি ও কুর্দদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় এই মার্কিনি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই এক হাজার ৫০০ সেনা যাওয়ার পর ইরাকে মার্কিন সেনার সংখ্যা দাঁড়াবে তিন হাজার ১০০। পাশাপাশি, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের দমন করতে ৫৬০ কোটি ডলার অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের কাছে আবেদন করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।অন্যদিকে, ইরাকের আনবার প্রদেশে আইএস-এর অগ্রগতি মার্কিন প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রদেশের একের পর এক অঞ্চল আইএস-এর দখলে চলে গিয়েছে। প্রায় ছ’হাজার ইরাকি সেনা নিহত হয়েছে। আহত ও পলাতকের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। আইএস ঠেকাতে আনবারে প্রায় পাঁচ হাজার আদিবাসীদের নিয়ে মিলিশিয়া দল তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে বাগদাদ। নতুন মার্কিন সেনারা সেই কাজেও সাহায্য করবে।