বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ইরাকে আবার হামলা, পৌঁছেছে মার্কিন সেনা

image_97365.irak-hamla

ইরাকের রাজধানী বাগদাদের উত্তরাঞ্চলে জঙ্গিদের হামলা ঠেকাতে লড়ে যাচ্ছে নিরাপত্তাকর্মীরা। ওই সংঘর্ষে ১৯ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
দিয়ালা প্রদেশে নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, বাগদাদের ১০০ কিলোমিটার উত্তরে জঙ্গিদের হামলা ঠেকাতে লড়াই করে যাচ্ছেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে ২৭৫ সেনা পাঠাচ্ছে – সোমবার এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর নতুন করে এই হামলা শুরু হয়েছে। সোমবার সুন্নি জঙ্গিরা মসুল ও সিরীয় সীমান্তের মধ্যকার তাল আফারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা দিতেই সৈন্য পাঠাচ্ছে। এরই মধ্যে ১৭৫ জন সেনা ইরাক পৌঁছেছে। একশ অতিরিক্ত সেনাকে ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হয়েছে। প্রয়োজন পড়লেই তাঁদের পাঠানো হবে।
ইরাক ছাড়ছে সাধারণ মানুষ
এক সপ্তাহ আগে ইরাকের মসুল শহরটি দখল করে আল-কায়েদার শাখা ‘দ্য ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট’ বা আইএসআইএলের জঙ্গিরা। কিরকুকের দিকে জঙ্গিরা যতই এগিয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে সাধারণ মানুষ ততই পালিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও কোথাও সেনারা ইউনিফর্ম পরিবর্তন করে পালিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মিশে গেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ইরাকে সহিংসতা দমনে ইরানের সঙ্গে মিলে কাজ করবেন তাঁরা। জঙ্গিদের বিতাড়িত করার লড়াইয়ে সাধারণ মানুষও ইরাকের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে
তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই ইরানের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ইরাকে অভিযান চালাবে কি না– সে সম্ভাবনা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একদফা আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
উপদেষ্টাদের সঙ্গে ওবামার বৈঠক
সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। জঙ্গিদের দমনে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে সেখানে। তবে ইরাকে অভিযান চালানোর জন্য বিশেষ বাহিনী প্রস্তুত হচ্ছে কিনা – সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেনি হোয়াইট হাউজ। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কেটলিন হাইডেন বলেছেন, ওবামা তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দলকে বলেছেন ইরাকের নিরাপত্তাবাহিনীকে সহায়তা দেয়ার জন্য সম্ভাব্য সব রকমের প্রস্তুতি নিতে।
কুর্দিস্তানের প্রতিক্রিয়া
মঙ্গলবার কুর্দিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নেচিরভান বারজানি বিবিসিকে বলেছেন, ইরাক বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আসা প্রায় অসম্ভব। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকির জন্য এটা সত্যিই একটা শক্ত চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। সমস্যা সমাধানে সেনাবাহিনী একমাত্র ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জানান কুর্দিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
ওদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান নাভি পিল্লাই বলেছেন, বিদ্রোহীরা দেশটির উত্তরাঞ্চলে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
ইরাকের ‘দ্য ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট’ বা আইএসআইএলের নেতৃত্বাধীন জঙ্গিরা গত সপ্তাহে মসুল এবং তিকরিতসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করেছে। অবশ্য কয়েকটি শহর পুনর্দখলও করেছে সরকারি বাহিনী।
সূত্র : ডয়চে ভেলে