Saturday, February 8Welcome khabarica24 Online

আজ বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস ।। ৬ বছরে চট্টগ্রামে ৬৩৫ কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত

20170128_120128

কুষ্ঠ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার সরকারে দর্শন। যে হারে রোগী শনাক্ত হচ্ছে তাতে এই দর্শন অর্জনে প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি। তারই আলোকে আজ পালিত হচ্ছে ৬৩ তম বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস। দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে কুষ্ঠ ইলিমিনেশনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে এবং চট্টগ্রামে হয়েছে ২০১১ সালে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি ১০ হাজার লোকের মধ্যে একজনের কম লোক কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ইলিমিনেশন বলে।

২০২০ সালের মধ্যে রোগী সনাক্তের সময় গ্রেড-২ ডিজেবিলিটিসহ কুষ্ঠ আক্রান্তের হার প্রতি লাখে ১ এর নীচে নিয়ে আসা এবং শিশু কুষ্ঠ রোগী সনাক্তের সময় গ্রেড-২ ডিজেবিলিটি শূন্যে নিয়ে আসা সরকারের লক্ষ্য। চট্টগ্রাম অঞ্চলে এই প্রতিবন্ধিতার হার পৌঁছেছে ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশে এবং বাংলাদেশে ৮ দশমিক ২ শতাংশে। দেরীতে রোগী সনাক্ত হওয়াই এর মূল কারণ এই হারকে প্রতি বছর কমিয়ে আনাই লক্ষ্য। কুষ্ঠ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন যেন মানুষ প্রাথমিক অবস্থায় কুষ্ঠ রোগীকে সনাক্ত করতে পারে। দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকারের সহযোগী হিসেবে কুষ্ঠমুক্ত দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে ১৯৯১ সাল থেকে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো কুষ্ঠরোগ মুক্ত হয়নি। ২০১৪ সালে দেশে ৩ হাজার ৬২১ জন, ২০১৫ সালে ৩ হাজার ৯৭৮ জন, ২০১৬ সালে প্রায় ৩ হাজার ৭৪৯ জন কুষ্ঠ রোগীকে সনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে লেপ্রসি মিশনের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

কুষ্ঠ রোগের প্রাদুর্ভার নীলফামারী, গাইবান্দা, জয়পুরহাট, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, দিনাজপুর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোশেন এলাকায় উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামে গত ৬ বছরে ৬৩৫ জন, কক্সবাজারে ১২৩ জন, তিন পার্বত্য জেলায় ৯০৬ জন কুষ্ঠ রোগী সনাক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে এখনো ধারণা করা হয় কুষ্ঠ পাপের ফল, বংশগত রোগ-এর কোনো চিকিৎসা নেই। কেউ এই রোগে সনাক্ত হলে লোকের ভয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসতে চায় না। সচেতনতার অভাবে ও সময় মতো ওষুধ না খাওয়ার ফলে কুষ্ঠের কারণে দেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তি ‘ঘা’ ও বিভিন্ন ধরন ও মাত্রায় প্রতিবন্ধিকতার শিকার হয়ে আছেন। সুতরাং, রোগ সনাক্ত করা, চিকিৎসা নেয়া এবং সামাজিক ব্যাধি দূর করার জন্য প্রয়োজন ব্যাপক গণ সচেতনতা।
লেপ্রসি মিশনের তথ্যে জানানো হয়, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে ওষুধ নিয়ে আগ্রাবাদ আমেরিকান হাসপাতাল, চমেক হাসপাতাল, কাপাসগোলা চসিক ক্লিনিক, ফিরোজশাহ আরবান ডিসপেনসারি, জেনারেল হাসপাতাল ও তিন পার্বত্য জেলায় ২৫টি ক্লিনিক পরিচালনা করছে। নতুন রোগী পেলে তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রোগীর প্রতি ভালো আচরণের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। গণসেচতনার মধ্য দিয়ে মানুষ রোগ সম্পর্কে জানবে, সনাক্ত করতে শিখবে, ভয়ভীতি ছাড়া চিকিৎসা নিতে আসবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি